সিনহার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন ভাই ভাতিজা

| মঙ্গলবার , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) ঋণের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিলেন তার বড় ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা ও ভাতিজা শঙ্খজিৎ সিনহা। তারা দুজনেই বলেছেন, ‘এস কে সিনহার কথাতেই’ তাদের নামে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা শাখায় হিসাব খোলা হয়েছে। পরে সেই হিসেবে সোয়া দুই কোটি টাকা স্থানান্তরের বিষয়ে তারা ‘জানতেন না’। ৭০ বছর বয়সী নরেন্দ্র কুমার সিনহা সাবেক প্রধান বিচারপতির আপন বড় ভাই। আর শঙ্খজিৎ সিনহা বিচারপতি সিনহার মামাতো ভাইয়ের ছেলে। গতকাল সোমবার ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলমের আদালতে তারা নিজেদের জবানবন্দি তুলে ধরেন। খবর বিডিনিউজের।
এদিন সাক্ষ্য গ্রহণের সময় মামলার অন্যতম আসামি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী (বাবুল চিশতী) অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাশের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় কারাগারে। ২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটি নিয়ে দেশ ছাড়ার পর বিদেশ থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তখনকার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। তাকে পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার কাজ চলছে। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তার ভাই নরেন্দ্র বলেন, তিনি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রধান বাতি রক্ষক হিসাবে চাকরি করতেন। ২০০৫ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যান। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উত্তরা শাখায় তার এবং তার ভাতিজা শঙ্খজিতের যৌথনামে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে যে চার কোটি টাকার ঋণ আত্মসাতের কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্যে দুই কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার টাকা নরেন্দ্র ও শঙ্খজিতের সেই যৌথ হিসাবে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
নরেন্দ্র আদালতে বলেন, তার ভাই এস কে সিনহা একদিন তাকে বলেন, বিশেষ প্রয়োজনে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলো প্রয়োজন, কিন্তু সরকারি চাকরিতে থাকার কারণে তার পক্ষে তা সম্ভব নয়। সেজন্য এসকে সিনহার ‘অনুরোধে’ শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের কিছু কাগজপত্রে সই করেন বলে আদালতকে জানান নরেন্দ্র। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, তিনি কখনোই ওই ব্যাংকে যাননি এবং কোনো চেকেও স্বাক্ষর করেননি। শঙ্খজিতের সঙ্গে তার কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল না। সোনালী ব্যাংকের সুপ্রিম কোর্ট শাখায় এস কে সিনহার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই যৌথ অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া টাকার বিষয়ে তার কোনো ‘ধারণাও নেই’। ওই অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কিছু কাগজপত্রে সই করা ছাড়া লেনদেন সম্পর্কে ‘কিছুই জানতেন না’ এবং এ সব বিষয়ে এস কে সিনহাই ‘এককভাবে অবগত ছিলেন’ বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন তার ভাই।
নরেন্দ্রর সাক্ষ্যে যেহেতু বাবুল চিশতী বা অন্য কোনো আসামির নাম আসেনি, সে কারণে এস কে সিনহার ভাইকে সাক্ষী হিসেবে জেরা করবেন না বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহীনুল ইসলাম অনিসহ অন্যরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি কার্যালয়ে পদবঞ্চিতদের আগুন
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি