সিদ্ধ স্থিতিশীল, বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে আতপ

চালের বাজার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১ মার্চ, ২০২১ at ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ

পাইকারিতে এখনো বেড়েই চলেছে চালের দাম। গত এক সপ্তাহ ধরে সব ধরণের সিদ্ধ চালের দাম একপ্রকার স্থিতিশীল থাকলেও বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে আতপ চাল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়েছে ঠিক, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এখনো মোকামগুলোতে বেশি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে। এদিকে চালের দামের সাথে বেড়েছে ধানের দামও। গতকাল নগরীর দুই বৃহৎ চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিদ্ধ চালের মধ্যে জিরাশাইল, নাজিরশাইল, মিনিকেট, কাটারিভোগ, পাইজাম, স্বর্ণা ও মোটা চালের দাম এক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। তবে আতপের মধ্যে বেতি, পাইজাম, মিনিকেট, কাটারিভোগের দাম বস্তায় সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এসব চালের সিংহভাগ আসে উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর এবং কিশোরগঞ্জের আশুগঞ্জ থেকে। চালের আড়তদাররা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরণের আতপ চালের দাম বেড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাটারিভোগ আতপের। কাটারি আতপের দাম সপ্তাহ আগে ছিল ৩ হাজার ৫০ টাকা। কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতে ৩৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট আতপ বস্তায় ২০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ২ হাজার ৯০০ টাকা, পাইজাম আতপ ২০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকা এবং বেতি আতপ বস্তায় ২৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। অন্যদিকে বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০ টাকা, নাজিরাশাইল ৩ হাজার ৩৩০ টাকা, কাটারি সিদ্ধ ২ হাজার ৮৫০ টাকা এবং স্বর্ণা সিদ্ধ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকা।
জানতে চাইলে পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, এই মুহূর্তে বাজারে চালের সংকট থাকার কথা নয়। এছাড়া সরকার কয়েক দফায় চাল আমদানিতে সর্বোচ্চ ৫২ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কমিয়েছে। তাই এখন দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা দেখছি না। আমরা শুনেছি-উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন বড় বড় মোকামের মালিকরা আমদানি করা চাল মজুদ করে রেখেছেন। তারা সেইসব চাল এই মুহূর্তে বাজারে খুব একটা ছাড়ছেন না। যার ফলে বাজার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।
চট্টগ্রাম রাইচ মিলস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ বলেন, ধানের দাম বেশি তাই চালের দাম বাড়ছে। আসলে চালের বাজারে দাম যখন বাড়ে তখনই কারসাজির অভিযোগ উঠে। এটি নতুন কিছু নয়। চালের সরবরাহ বাড়লে দাম এমনিতেই কমে যাবে। বর্তমানে মোটা ধানের মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এছাড়া চিকন ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। উভয় প্রকার ধানের দাম মণপ্রতি বেড়েছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ হতে ১০ শতাংশ এবং শর্ত সাপেক্ষে সমুদয় রেগুলেটরি ডিউটি থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। প্রজ্ঞাপনের আওতায় রেয়াতি হারে চাল আমদানির শর্ত হচ্ছে, এজন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত কমপক্ষে যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হয়ে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বহাল থাকবে। এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করে ‘নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়’ চাল আমদানির অনুমতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। ওইদিন এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, চালের দাম নিয়ে ভোক্তাদের যাতে কষ্ট না হয়, আবার কৃষকও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেজন্য নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় চাল আমদানির সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ২৮ ইউপি নির্বাচন ১১ এপ্রিল
পরবর্তী নিবন্ধসার্বিক পরিস্থিতি এখনো পর্যবেক্ষণ করছি, তারপর পদক্ষেপ : মেয়র