সিডিএ’র ১৩ প্রকল্পে ‘অনিয়মের’ তদন্ত শুরু

| রবিবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে নেওয়া ১৩ প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা তা তদন্তে কাজ শুরু করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি। যে ১৩টি প্রকল্পের বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করবে সেগুলোর মোট ব্যয় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ছয়টি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চলমান সাতটির কাজ। গতকাল শনিবার কমিটির সদস্যরা সিডিএ কার্যালয়ে এসে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন। খবর বিডিনিউজের।

পাঁচ সদস্যের এই কমিটির প্রধান গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আজ কাজ শুরু করেছি। প্রকল্প পরিচালকদের সাথে বৈঠক হয়েছে। প্রকল্প বিষয়ে কিছু তথ্য চেয়েছি। এরপর আমরা প্রকল্পগুলো পরিদর্শনে গিয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, এখনো প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলছে। আগামী সপ্তাহে আবার আসব। তদন্ত একটা পর্যায় পর্যন্ত আগালে তখন অগ্রগতি বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারব। সিডিএ’র এই প্রকল্পগুলো হলনগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, মুরাদপুর ফ্লাইওভার, কদমতলী ফ্লাইওভার, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, কালুরঘাট থেকে চাক্তাই পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, বাকলিয়া সংযোগ সড়ক, সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প, সিডিএ স্কয়ার প্রকল্প, কল্পতরু প্রকল্প, সল্টগোলা ডরমেটরি প্রকল্প, বায়েজিদ লিংক রোড ও চট্টগ্রাম মহানগরীর মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন প্রকল্প। এর মধ্যে লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এঙপ্রেসওয়ে প্রকল্পটির অনিয়ম তদন্তে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি একটি উপকমিটি গঠন করেছিল।

গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে ২০২৪ সালের ৪ জুলাই ওই উপকমিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে এতে কিছু ‘অসঙ্গতি’ ছিল বলেছিল।

শনিবার দুপুরে সিডিএ’র সম্মেলন কক্ষে এসব প্রকল্পের পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। এরপর তারা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে যান।

ক্ষমতার পালাবদলের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা এবং এসব প্রকল্প বিষয়ে যে অভিযোগগুলো পাওয়া গেছে তা তদন্ত করতে সমপ্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এই কমিটি গঠন করে।

কমিটির সদস্য সচিব হলেনসিডিএ’র সচিব রবীন্দ্র চাকমা। আর সদস্যরা হলেনগৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শাখার উপসচিব নাজমুল আলম, সিডিএ’র বোর্ড সদস্য স্থপতি জেরিনা হোসাইন ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ কুদরত আলী। মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এই তদন্ত কমিটি প্রয়োজনে কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মতামত নিতে পারবে। প্রকল্পগুলোর কী কী কাজ হয়েছে এবং কী কী কাজ হয়নি, কেন হয়নি তা জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্প নেওয়ার কারণ, কার বা কাদের চাপে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, কীভাবে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়এসব বিষয়েও জানতে চেয়েছেন কমিটির সদস্যরা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে সিডিএ’র চেয়ারম্যান পদে রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া শুরু হয়। তার আগে এই পদে দায়িত্ব দেওয়া হত প্রকৌশলীদের। সিডিএ চেয়ারম্যান পদে দলটির নগর কমিটির নেতা আবদুচ ছালাম, জহিরুল আলম দোভাষ এবং সবশেষ মোহাম্মদ ইউনুসকে নিয়োগ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তবে এসব প্রকল্পের সবই নেওয়া হয় সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সময়ে। পরের দুই চেয়ারম্যানের মেয়াদে নতুন কোনো প্রকল্প গ্রহণ না হলেও বাস্তবায়ন কাজ শেষ হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারত থেকে ২৬ হাজার ৯৩৫ মেট্রিক টন চাল চট্টগ্রাম পৌঁছেছে
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে মুক্তিপণে ছাড়া পেলেন এক কাঠুরিয়া