সিডিএর প্রকল্প ও স্লুইচ গেট নির্মাণে ভরাট হয় গুপ্ত খাল

পুনঃখনন কাজ উদ্বোধনকালে শাহাদাত জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন ভূমিকা রাখবে

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

সিডিএ’র প্রকল্প এবং স্লুইচ গেট নির্মাণ করার কারণে নগরের ৪০ নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে গুপ্ত খাল ভরাট হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় খালটি পুনরুদ্ধার করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল সোমবার পূর্ব কাঠগড় আরব আলির দোকান থেকে কন্ট্রোলের মোড় পর্যন্ত গুপ্তখাল পুনঃখননের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডা. শাহাদাত।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের অনেক সমস্যা আছে, অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণে বৃষ্টি বেশি হলে মানুষ বের হতে পারে না। জলমগ্ন থাকে শহর। মানুষ খুব অসহায় অবস্থায় থাকে। জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে সবগুলো খাল খনন করে জলপ্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

এ সময় গুপ্ত খাল ভরাট থাকায় স্থানীয় লোকজন জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, গুপ্ত খালের যে সমস্যাগুলো আপনারা বলেছেন আমি লিখে নিয়েছি। ক্রমান্বয়ে ইনশাআল্লাহ আপনাদের এই সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এই খাল খনন কর্মসূচি বিএনপির কর্মসূচি। এক সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কৃষকের আইলে আইলে, শ্রমিকের বস্তিতে বস্তিতে উনি গেছেন। উৎপাদনমুখী রাজনীতি করেছেন উনি। যার কারণে উনার সময়ে গার্মেন্টস সেক্টর, মানব সম্পদ পাশাপাশি কৃষি খাতের বিকাশ ঘটেছে। উনি গ্রামেগঞ্জে গিয়ে খাল খনন কর্মসূচি করেছেন। চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন গুরুত্বপূূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বিধায় জলাবদ্ধতা নিরসণে সবগুলো খাল খনন করে জলপ্রবাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নে দুর্নীতি বন্ধ প্রয়োজন করা প্রয়োজন মন্তব্য করে বলেন, গত ১৬ বছর কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে দেখেন। খাল খননের কাজটি করার কথা ছিল সিটি কর্পোরেশনের। কিন্তু সিডিএ কাজটি নিয়ে নিয়েছে। আবার কাজ শেষ হলে কিন্তু এটা বুঝিয়ে দিবে কাকে? সিটি কর্পোরেশনকে। তারা প্রায় ৩২ টার মত স্লুইচ গেট করেছে। এগুলো কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অনেক বেশি। এটা কিন্তু সিটি কর্পোরেশনকে করতে হবে। ডা. শাহাদাত বলেন, বর্ষাকালে আমরা বলছি ওনাদেরকে (সিডিএ) স্লুইচ গেটগুলো খুলে দিতে। স্লুইচ গেট এখন বন্ধ আছে। খুলে না দিলে জলাবদ্ধতা বাড়বে।

তিনি বলেন, আর আমরা এখন খাল খনন কর্মসূচির উপর জোর দিচ্ছি। কারণ সামনে বর্ষাকাল। আমরা যত বেশি খাল খনন করতে পারব জলাবদ্ধতা তত কম হবে। সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্প ২০২৬ সালে শেষ হবে। আমরা মনে করি এই দুই বছর আমাদের জন্য একটু ক্রিটিক্যাল টাইম। এই দুই বছর আমরা যত বেশি পারি খাল খনন করব আর নর্দমা পরিষ্কার রাখবো। আমরা কোন ধরনের প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন, কর্কশিটসহ অপচনশীল জিনিস খালনালায় ফেলবনা। ফেললে জলাবদ্ধতা হবে।

মেয়র বলেন, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আন্তর্জাতিক পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রম আমরা সফট ওপেনিং করে দিয়েছি। এখানে আলোকায়ন করেছি, বনায়ন করেছি, নারীদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা করেছি। পার্কিং এর সমস্যা পার্কিং এর ব্যবস্থা করে দিব। রেস্টুরেন্ট করে দেব সুন্দর করে। অনেকে বাইরে থেকে এসে যাতে থাকতে পারে সে জন্য ইকো রিসোর্স এখানে থাকবে। এখানে একটা আন্তর্জাতিক মানের বিনোদন কেন্দ্র আমরা করবো। যাতে করে আমাদের ছেলেরা যারা চাকরি পাচ্ছে না, তাদেরও চাকরির সংস্থান এখানে ইনশাল্লাহ হবে। একটা সুন্দর প্ল্যান নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। এই প্ল্যান যাতে সুন্দর মতে আমি বাস্তবায়ন করতে পারি সেজন্য আপনারা আমার সাথে থাকবেন।

তিনি বলেন, এই শহরটা আমার এক শহর নয়। এই শহর আপনাদের সবার। কাজেই এই শহরকে আপনাদেরকে ভালোবাসতে হবে। এই শহরের জন্য, নতুন প্রজন্মের জন্য আপনাদেরকে একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন সিটি আপনাদেরকে উপহার দিতে হবে।

সভার পর মেয়র খাল খনন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের হাজিরা যাচাই করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি। গুপ্ত খাল পুনঃখননের কার্যক্রম উপলক্ষে আয়োজিত সভায় পতেঙ্গা হালিশহর আঞ্চলিক শ্রমিক দলের সভাপতি মোহাম্মদ আবু জাফরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কামাল উদ্দিন, মো. সেলিম, আবু জাফর, মো. হারুন, শাহাবুদ্দিন, ইকবাল হোসেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউত্তর কাট্টলীতে শর্ট সার্কিটের আগুনে পুড়ল তিন ফার্নিচার কারখানা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে তারুণ্যের উৎসবের বর্ণাঢ্য র‌্যালি