সিজেকেএস অ্যাথলেটিক্সে চ্যাম্পিয়ন মুক্তিযোদ্ধা

দ্রুততম মানব আরিফুল আর মানবী রিনি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২৫ জুন, ২০২২ at ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

অভাবের সংসারের মত অনেকটা ধার দেনা করেই যেন চলছে চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্স। কখনো স্কুল থেকে আবার কখনো কলেজ থেকে কিংবা শহরের বাইরে থেকে টেনে এনে চালাতে হয় অ্যাথলেটিক্স। দেশের অ্যাথলেটিক্সের যেখানে বেহাল দশা সেখানে চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্স আর এগুবে কোথা থেকে। যদিও সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির নিজেই স্বীকার করলেন অ্যাথলেটিক্সে তাদের দৈন্যের কথা। নানা কারনে পিছিয়ে যাচ্ছে অ্যাথলেটিক্স। তবে তিনি হাল ছাড়ার পাত্র নন। অন্তত ধীরে ধীরে হলেও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান খেলার রাজা অ্যাথলেটিক্সকে। অ্যাথলেটিক্স মানেই খেলাধুলার অন্যরকম এক অনুভূতি।

পতাকা উত্তোলন হবে, মার্চফাস্ট হবে, শপথ বাক্য পাঠ হবে, মশাল জ্বালানো হবে। গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে এসবই হয়েছে। কিন্তু প্রত্যাশিত মানের অ্যাথলেটিক্স হয়নি। তারপরও এই খর রোদে যারা দল নিয়ে মাঠে এসেছে একদিনের এই আয়োজনকে সফল করতে তাদেরকে ধন্যবাদ দেওয়া যায়। কারণ তারা ছিলেন বলেই অন্তত মাঠে গড়িয়েছে অ্যাথলেটিক্স।

গতকালের একদিনের এই আয়োজনে অবশ্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। আর রানার্স আপ হয়েছে পটিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা। অবশ্য এবারে পটিয়া এবং সীতাকুন্ড উপজেলা থেকে বেশ কিছু কিশোর অ্যাথলেট এসেছে। সীতাকুন্ড তৃতীয় স্থান লাভ করে। যদিও পয়েন্টের ব্যবধানে মুক্তিযোদ্ধা পেয়েছে ৮১ পয়েন্ট। পটিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা পেয়েছে ৩৮ পয়েন্ট। সীতাকুন্ড উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা পেয়েছে ১৪ পয়েন্ট। এবারের প্রতিযোগিতার দ্রুততম মানব হয়েছে আরিফুল ইসলাম। পটিয়ার এই ছেলে খেলেছে পটিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার হয়ে। আর দ্রুততম মানবী হয়েছেন হুমায়রা রশিদ রিনি। হাটহাজারীর এই মেয়ে খেলেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের হয়ে। বিভিন্ন উপজেরা থেকে এবারের আসরে বেশ কিছুু তরুণ তরুণী এসেছে। এখন এদের যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তাহলে কিছু অ্যাথলেট বের হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি মোঃ মমিনুর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেণ সিজেকেএস সহ সভাপতি এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সিজেকেএস অ্যাথলেটিক্স কমিটির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, সম্পাদক মোঃ কামাল উদ্দিন, নির্বাহী সদস্য মো: হারুন আল রশীদ, সিজেকেএস কাউন্সিলর আব্দুর রশীদ লোকমান, ওসামান গনি রানা, শৈবাল দাশ সুমন।

প্রতিযোগিতার মশাল প্রজ্বলন করেন দুই সাবেক কৃতী অ্যাথলেট জোসনা আফরোজ এবং সরওয়ার উদ্দিন সোহেল। এবারের অ্যাথলেটিঙ প্রতিযোগিতায় সিজেকেএস এর অনুমোদিত ক্লাব ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ১৫ টি দল অংশ গ্রহণ করে। আর এই দলগুলোর পক্ষে ৭৮ জন পুরুষ ও ৪৬ জন মহিলা অ্যাথলেট অংশগ্রহণ করেছে। দল গুলো হলো: পটিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, চট্টগ্রাম ফুটবল ক্লাব, সেবানিকেতন, শতদল ক্লাব, বাকলিয়া একাদশ ক্লাব (জুনিয়র), বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র (লাল), আমিন ইউনাইটেড স্পোর্টিং ক্লাব, রাউজান উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, স্টার ক্লাব, শহীদ শাহজাহান সংঘ, বিসিআইসি ক্রীড়া সংসদ, আগ্রাবাদ নওজোয়ান ক্লাব, সীতাকুন্ড উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা, এম এইচ স্পোর্টিং, চট্টগ্রাম আবাহনী লি: (জুনিয়র)।

চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি এবং সাধারন সম্পাদক দুজনই বলেন বাংলাদেশে ফুটবল, ক্রিকেট কিংবা অন্য ইভেন্ট গুলো যেভাবে এগিয়েছে ঠিক সেভাবে এগুয়নি অ্যাথলেটিক্স। চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্সকে এগিয়ে নিতে সিজেকেএস অ্যাথলেটিক্স কমিটিকে কাজ শুরু করার আহবান জানান তারা। একদিনের এই অ্যাথলেটিক্স আয়োজনকে ঘিরে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সাবেক অ্যাথলেটদের যেন মেলা বসেছিল। অনেকেই জীবন সায়াহ্নে এসে নিজের প্রিয় মাঠে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ে। সাবেক অ্যাথলেটরাও চান চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্স এগিয়ে যাক। আবার সে হারানো গৌরব ফিরে আসুক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহজে যেতে ভারত সিরিজে খেলবেন না আদিল রশিদ
পরবর্তী নিবন্ধপদ্মা সেতু আমাদের গর্ব, অহংকার : প্রধানমন্ত্রী