বাংলাদেশের করোনা ভাইরাস পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে পৃথক নীতিমালা করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, শিল্পনীতিতে দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির বিকাশের লক্ষ্যে আরও বেশি প্রাধান্য দেওয়াসহ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের লক্ষ্যে শুল্ক ও নীতি সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব করেন। যাতে উদ্যোক্তারা নীতিমালায় বর্ণিত সুবিধাগুলো সহজে গ্রহণ করতে পারেন। গতকাল রোববার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘শিল্পনীতির সীমাবদ্ধতা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শামস মাহমুদের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. আতিউর রহমান। এছাড়া ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মাসুদুর রহমান। খবর বাংলানিউজের।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শামস মাহমুদ বলেন, প্রয়োজনীয় গবেষণা ও বিনিয়োগের অভাবে দেশের উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে বেশ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। গত তিন দশকে বাংলাদেশের শিল্পখাত প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও তা ছিল মূলত রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাত নির্ভর, তবে শিল্পখাতের বহুমুখীকরণে চামড়া, পাট, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, জাহাজ নির্মাণ, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসিউটিক্যাল প্রভৃতি শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা একান্ত আবশ্যক। এজন্য একটি নীতিমালা এবং মাঝারি শিল্পের জন্য পৃথক নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব করেন তিনি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশে করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এজন্য অতিক্ষুদ্র, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, বৃহত্তর শিল্পের ফরোয়ার্ড ও ব্যকওয়ার্ড লিঙ্কেজকে শক্তিশালী করা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ ও শহরে বসবাসকরীদের মধ্যে বৈষম্য হ্রাস করার লক্ষ্যে আগামী শিল্পনীতি প্রণয়ন করা হবে। তিনি বলেন, অগ্রাধিকারমূলকখাতগুলোতে নীতি সহায়তা, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আয়ত্বকরণের প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন ও করোনা বা দুর্যোগ মোকাবিলায় টেকসই দিকনির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি নতুন জাতীয় শিল্পনীতিতে গুরুত্ব পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। নতুন শিল্পনীতি ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন এবং ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরও উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে এবং এর ফলে নতুন দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ আরও অধিক পরিমাণে আকৃষ্ট হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।