সিএনজির মালিক হওয়ার স্বপ্নে পটিয়ার নুরুল আলমকে হত্যা

গ্রেপ্তার দুইজনের আদালতে জবানবন্দি

পটিয়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

পটিয়ার সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল আলম হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মোমিন সরকার (৩০) ও নেজাম উদ্দীন ওরফে মিজান (৩৫) ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পটিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়। গতকালই আদালতের ১৬৪ জবানবন্দির উদ্বৃতি দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমান বলেন, সিএনজি অটোরিকশা চালক নুরুল আলমের মালিকানাধীন সিএনজি অটোরিকশাটি ছিনতাই করার জন্য মোমিন সরকার ও নেজাম উদ্দীন ওরফে মিজান হত্যাকাণ্ড ঘটানোর ২-৩ দিন আগে পরিকল্পনা করে। মূলত সিএনজি অটোরিকশার মালিক হওয়ার স্বপ্নে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
প্রথমে তারা দুইজনই চালক নুরুল আলমের বিশ্বাস অর্জনের জন্য তার গাড়ি ভাড়া করে বোয়ালখালীতে নিয়ে যায়। এভাবে নুরুল আলমের সাথে মোমিন ও নেজাম সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে ঘটনার একদিন আগে নুরুল আলমকে বোয়ালখালীতে নিয়ে গেলে তার গাড়ি ভাড়া বকেয়া রাখে মোমিন ও নেজাম। হত্যাকাণ্ডের দিন সকালে গত ১০ ফেব্রুয়ারি নুরুল আলমকে ভাড়া টাকার নিয়ে যাওয়ার জন্য বোয়ালখালীতে ডেকে নিয়ে যায় নিজাম। নিজাম ওই দিন বিকেলে ৩ পিস ঘুমের ওষুধ গুড়ো করে সাথে রাখে। নিজাম নুরুল আলমকে নিয়ে মোমিনের বোয়ালখালীর ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। তার বাসায় চায়ের সাথে গুড়ো করা ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। এরপর তারা তিনজন মোমিনের বাসা থেকে বের হয়ে আসে। নুরুল আলম ও নিজাম গাড়ির পেছনে বসে মোমিন সিএনজি অটোরিকশা চালিয়ে বোয়ালখালীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকে। যাতে করে ঘুমের ওষুধ দ্রুত কাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে নুরুল আলমের শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে তারা নুরুল আলমকে পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকাড়া গ্রামের বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে আনে। ওই স্থানে হাতুড়ি দিয়ে মোমিন নুরুল আলমের মাথায় আঘাত করে। ড্রাই (লোহার রড় বাকাঁ করার যন্ত্র) দিয়ে কপালে আঘাত করার সাথে সাথে মাথার সামনের অংশ ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। এসময় তারা ড্রাই মেশিনটি দিয়ে দুইজনই একত্রে নুরুল আলমের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য নুরুল আলমের লাশটি হত্যা করার স্থান থেকে আরও ১ কিলোমিটার দূরত্বে বুধপুরা সড়কের কাজী আবদুল আলী সওদাগরের জমিতে ফেলে দিয়ে সিএনজি অটোরিকশাটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি ও ড্রাই মেশিন এবং খুনি নেজাম উদ্দিনের ব্যবহৃত রক্তমাখা লুঙ্গিটি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে পটিয়ার কর্তলা এলাকায় রাস্তার পাশে সিএনজি চালক নূর আলমের রক্তাক্ত মরদেহ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন রাতে নূর আলমের স্ত্রী মুন্নি আকতার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধষাটোর্ধ্ব সবার জন্য আসছে পেনশন সুবিধা
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড় কেটে মাটি বিক্রি প্রশাসনের অভিযান