সিইউএফএল সংলগ্ন খালের পানি খেয়ে ১৩ মহিষের মৃত্যু

কারখানা কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি

আনোয়ারা প্রতিনিধি | সোমবার , ২৫ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারায় চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানির (সিইউএফএল) সংলগ্ন খালের পানি খেয়ে ১৩ মহিষের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সিইউএফএলের বর্জ্য মিশ্রিত বিষাক্ত পানি খেয়ে মহিষগুলোর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে সিইউএফএল কারখানার পশ্চিমের মাঝের চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ১৪ এপ্রিল দুটি গরুর মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা ঘটনা তদন্ত করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। আর সিইউএফএল কারখানা কর্তৃপক্ষ ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসিম উদ্দীন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে বারশত ইউনিয়নের মাঝের চর এলাকায় সিইউএফএল সার কারখানার পশ্চিমে খালের বর্জ্য মিশ্রিত পানি খেয়ে স্থানীয় পারকি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মোহাম্মদ ইছহাক, নুর মোহাম্মদ ও মোহাম্মদ ইলিয়াসের ১৩টি মহিষ মারা যায়। মহিষগুলোর মূল্য ২২ লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত শনিবার রাতে সিইউএফএল কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়া বিষাক্ত বর্জ্য খালে অপসারণ করেন আর এতে খালের পানি বিষাক্ত হয়ে পড়ে। সে পানি পান করে ১৩টি মহিষের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে এলাকাবাসী গতকাল দুপুরে মৃত মহিষগুলো উদ্ধার করে সিইউএলএফ কারখানা গেটের সামনে নিয়ে আসেন। পরে ক্ষতিগ্রস্তরা সার কারখানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত মহিষের মালিক মো. ইলিয়াছ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সিইউএফএল কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের না জানিয়ে বিষাক্ত বর্জ্য খালে ছেড়ে দেন। আর ওই পানি খেয়ে আমাদের মহিষগুলো মারা যায়। বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও আমরা ঠিকমতো ক্ষতিপূরণ পাই না। তিনি বলেন, প্রতি বছর কয়েক দফা এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও কারখানা কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না।

বারশত ইউনিয়নের ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সিইউএফএলের বিষাক্ত বর্জ্যের পানি পান করে স্থানীয়দের ১৩টি মহিষ মারা গেছে। একের পর এক মহিষ মারা গেলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বর্তমানে সিইউএফএল কারখানায় উৎপাদন চলমান আছে। উৎপাদন চলাকালীন কোনো ধরনের বর্জ্য অপসারণ করা হয় না। গত ১৪ এপ্রিল যে দুটি গরু মারা গেছে সেই ঘটনায় আমরা পানির নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছি। এসব বর্জ্য মিশ্রিত পানি সিইউএফএল সার কারখানার ছিল না, এসব বর্জ্য ডিএপি সার কারখানার।

তিনি বলেন, গতকাল ৭/৮টি মহিষ মারা গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। যেহেতু স্থানীয় মহিষ মারা গেছে সে কারণে আমরা এ ঘটনা তদন্ত করতে কারখানার জিএমকে (টেকনিক্যাল) প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটি গতকাল বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পানির নমুনা সংগ্রহ করেছে। তদন্তে প্রমাণ মিললে সিইউএফএল ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য রেল স্টেশনে ভিড় বাড়ছে
পরবর্তী নিবন্ধছিনতাইকারী ধরতে চলন্ত শাটল থেকে চবি ছাত্রীর লাফ