সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করা সকল নাগরিকের দায়িত্ব

অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৭ জুলাই, ২০২১ at ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সিআরবি উন্মুক্ত এলাকায় ইউনাইটেড হাসপাতাল নির্মাণ নিয়ে বহু প্রশ্নের অবতারণা হয়েছে। চট্টগ্রামের উন্মুক্ত এলাকা সিআরবিকে অনেকে ‘ফুসফুস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মুক্ত পরিবেশে শ্বাস নেয়ার জায়গা হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওই এলাকাটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গত ২০০৮ সালে কালচারাল অ্যান্ড হেরিটেজ জোন (সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য) হিসেবে সংরক্ষণের আইনে নিয়ে এটিকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। তাই অত্র এলাকায় কোন প্রকার স্থাপনা বা তার আকৃতি পরিবর্তন করা যাবেনা, কারণ বাংলাদেশের সংবিধানে আর্টিকেল ২৪ দ্বারা সংরক্ষিত। আর্টিকেল ২৪ বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎপর্যমন্ডিত স্মৃতি নিদর্শন বস্তু বা স্থান সমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হতে রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সুতরাং সিআরবিকে কোন ভাবেই তার স্বরুপ থেকে পরিবর্তন করা যাবেনা। যদি করে তাহলে বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধান অসম্মান করা হবে। এছাড়া জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ১৬ নভেম্বর প্যারিসে অনুষ্ঠিত সাধারণ অধিবেশন-‘ঞযব ঢ়ৎড়ঃবপঃরড়হ ড়ভ ঃযব ড়িৎষফ পঁষঃঁৎধষ ধহফ হধঃঁৎধষ যবৎরঃধমব ’ রক্ষা আইন পাশ করা হয়। ‘ ন্যাচারেল হেরিটেজ’ এর যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাতেও সিআরবি সম্পূর্ণ ভাবে সংরক্ষিত। সিআরবির আকার, প্রকৃতি নষ্ট করে কোন প্রকার স্থাপনা নির্মাণ করা মানেই বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি।
যেহেতু প্রস্তাবিত হাসপাতালটি ২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওয়ার্ডস্থ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পড়েছে তাই হাসপাতাল নির্মাণের মাধ্যমে এলাকার নাগরিকদের শারিরীক সুস্থতার চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা প্রকট হতে পারে বিধায় হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করা সকল নাগরিকের দায়িত্ব। সিআরবি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত। এখানে কোন ধরনের হাসপাতাল নির্মাণ করা মানে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাসপাতাল কোনো অবস্থায় সিআরবি পরিসরে হতে পারে না
পরবর্তী নিবন্ধসিআরবি বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি