সিআরবিতে হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিতান্তই অবিবেচক

আরশাদুর রহমান | বুধবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম শহরের অতি প্রাচীনতম স্থাপনার মধ্যে অন্যতম সিআরবি বা সেন্ট্রাল রেলওয়ে ভবন। ১৮৯৯ইং সালে সিআরবি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রাণ প্রকৃতিতে ভরা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক অপরূপ লীলাভূমি এ্‌ই সিআরবি। ইট-পাথরের খাঁচায় বন্দি মানুষ দুর্দণ্ড সময় কাটাবে কিংবা বুকভরে নিঃশ্বাস নেবে- এমন উন্মুক্ত পরিসর খুব একটা অবশিষ্ট নেই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের সিআরবির সাত রাস্তার মোড় ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে। ব্রিটিশ আমলের চুন-সুরকির সিআরবি ভবনকে ঘিরে শতবর্ষী গাছগাছালি, পাহাড় ঘেরা মনোরম পরিবেশে নির্মাণ করা হয়েছে শিরীষতলা সহ বেশ কিছু নান্দনিক স্থাপনা। ছোট-বড় পাহাড়-টিলা আর নজরকাড়া বাংলোগুলো ঘিরে মন জুড়ানো এক প্রাকৃতিক পরিবেশ রয়েছে সিআরবিতে। আছে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম স্মৃতিফলক, ১৮৯৯ সালের তৈরি বাষ্পীয় রেল ইঞ্জিনের মডেল। নগরবাসী স্থানটিকে চট্টগ্রামের ‘ফুসফুস’ বলে থাকেন। কিন্তু এখানে একটি হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করে সেই ‘ফুসফুস’ ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অপরিণামদর্শী এমন উদ্যোগে হতাশা ফুটে উঠেছে নগরবাসীর মনে। মানুষের যেমন ফুসফুস থাকে তেমনি থাকে নগরের। সিআরবি হচ্ছে চট্টগ্রামের মানুষের মুক্ত বাতাস ও সবুজ আঙ্গিনায় প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেয়ার অন্যতম স্থান! বৈশাখী মেলা সহ অনেক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মিলন মেলা হয় সিআরবি শিরীষ তলায়। সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ হলে প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস হবে। অনেক বিরল প্রজাতির গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। চট্টগ্রামের মানুষের নিঃশ্বাস নেয়ার শেষ জায়গাটুকুও আর থাকবে না। সিআরবি একটি ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে চট্টগ্রামের বাইরে থেকেও লোকজন আসে। এসব বিবেচনায় এখানে হাসপাতাল করার সিদ্ধান্ত নিতান্তই অবিবেচক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাণ-প্রকৃতি ও নিসর্গের সুরক্ষা চাই
পরবর্তী নিবন্ধআসলো মহামায়া