বিভাগীয় ‘গণ–অবস্থান’ কর্মসূচি আয়োজনে তিনটি জায়গা বাছাই করেছিল চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। জায়গাগুলো হচ্ছে– লালদীঘি ময়দান, ওয়াসা মোড় এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে। এর যে কোনো একটিতে কর্মসূচি করার অনুমতি চেয়ে নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় গত বুধবার আবেদনও করে দলটি। তবে প্রস্তাবিত জায়গায় অনুমতি দেয়নি সিএমপি। পরে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বিকল্প হিসেবে নগরের সিআরবি এলাকা প্রস্তাব করলে তাতে সম্মতি দেয় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, আগামীকাল বুধবার সকাল ১১ টায় সিআরবিতে শুরু হবে গণ–অবস্থান কর্মসূচি। চলবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত। কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিটি সাংগঠনিক জেলা থেকে দলের নেতা–কর্মীরা অংশ নিবে। এজন্য গত কয়েক দিন ধরে একের পর এক প্রস্তুতি সভা করে যাচ্ছে সাংগঠনিক ইউনিটগুলো। এছাড়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে কর্মসূচি সফল করতে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতা–কর্মীরা।
কর্মসূচির বিষয়ে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর দৈনিক আজাদীকে বলেন, অবস্থান কর্মসূচির জন্য সিআরবি উপযুক্ত জায়গা। কর্মসূচি বাস্তবায়নে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হবে, এ বসার সুবিধা সিআরবিতে বেশি। তাছাড়া ওয়াসা মোড় বা অন্য কোথাও কর্মসূচি পালন করতে গেলে পথচারী বা সাধারণ লোকজনের কিছুটা অসুবিধা হতে পারে। সিআরবিতে সে সমস্যা হবে না।
তিনি বলেন, এর আগে যখন গণমিছিল করেছিলাম তখন ওয়াসা মোড় থেকে কাজীর দেউড়ি হয়ে তিন পুলের মাথা পর্যন্ত প্রচুর লোক হয়েছিল। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজট সৃষ্টি হয়। এবারের প্রোগ্রাম টানা চার ঘণ্টা চলবে। ওয়াসা মোড় বা অন্য কোথাও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে দীর্ঘ সময় মানুষের ভোগান্তি হতে পারে। তাই শেষ মুহূর্তে সিআরবিকে বেছে নেয়া হয়।
কি পরিমাণ লোক সমাগম হতে পারে জানতে চাইলে বলেন, ব্যাপক মানুষের সমাগমের টার্গেট আছে আমাদের। বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকে দলীয় কর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও স্বতস্পূর্তভাবে অংশ নিবে।
এদিকে গণ– অবস্থান কর্মসূচিকে সামনে রেখে গত রোববার রাতে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন তারেক রাহমান। এতে তিনি কর্মসূচিকে ঘিরে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন বলে দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী।
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, গণ–অবস্থান কর্মসূচি কীভাবে সাকসেস করা যায় সে আলোচনা হয়েছে। বিএনপি জনগণের দল তাই জনগণকে সম্পৃক্ত করে কর্মসূচিটি সফল করতে বলেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে মনের মিল না থাকলেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, ‘সরকার পতনে’ বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে এ ‘গণ–অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। শুরুতে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা এ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেয় দলটির হাইকমান্ড। সর্বশেষ গত রোববার সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে কর্মসূচি শুরুর সময় ১১ টা নির্ধারণ করা হয়। কর্মসূচি সফল করতে বিভাগীয় পর্যায়ে সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহানকে টিমের দলনেতা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমকে সমন্বয়কারী করা হয়। মাহবুবের রহমান শামীম দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রচুর লোক আসবে গণ–অবস্থান কর্মসূচিতে। সাধারণ মানুষও অংশ নিবে।