নগরীর সিআরবিতে ৫শ’ শয্যার বেসরকারি হাসপাতাল ও ১শ’ আসনের মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য রেলওয়ের নির্ধারিত স্থানে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ব্যানারের পাশে স্থানীয়রা তাদের দাবি-দাওয়াসহ উচ্ছেদের প্রতিবাদে পাল্টা ব্যানার ঝুলিয়েছেন।
বেসরকারি হাসপাতালকে বরাদ্দ দেয়া জমি থেকে রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনির স্টাফদের পরিবার নিয়ে চলে যেতে ১৫ দিনের জন্য নোটিশ দেয়া হলেও ১৫ দিন পার হয়ে গেছে। গতকাল পর্যন্ত কেউ স্টাফ কোয়ার্টার ছাড়েননি। স্টাফদের দাবি এবং কথা একটাই তাদের বাসযোগ্য-বাসস্থানের ব্যবস্থা না করলে তারা কেউ যাবেন না। এরই প্রতিবাদস্বরূপ ইতোমধ্যে রেলওয়ে শ্রমিক লীগ, সিবিএ সহ সকল সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। রেলের জমি বেসরকারি খাতে দেয়া যাবে না বলে হুমকি দিয়েছেন রেলের সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ। সিআরবিতে যে এলাকায় ৫শ’ শয্যার বেসরকারি হাসপাতাল ও ১শ’ আসনের মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই এলাকাটি রেলওয়ের বক্ষব্যাধি হাসপাতাল কলোনি। এখানে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন হাসপাতালে কর্মরতরা।
গতকাল কলোনিতে বসবাসরত রেলের স্টাফরা আজাদীকে জানান, একটি বেসরকারি হাসপাতালকে বরাদ্দ দেয়ার জন্য আমাদের কোয়ার্টার থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আমরা কোথায় যাবো-রেল কর্তৃপক্ষ সেই বিবেচনা করেনি। আমাদেরকে ১৫দিনের মধ্যে কোয়ার্টার ছেড়ে চলে যেতে নোটিশ দিয়েছে। বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করে না দেয়ায়-আমরা কেউ কোয়ার্টার ছাড়িনি। আমরা এই সংকটের মধ্যে পরিবার পরিজন নিয়ে এখন কোথায় যাবো?
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মামুন আজাদীকে বলেন, যেখানে বেসরকারি হাসপাতালের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়েছে সেখানে কিন্তু কোনো অবৈধ দখলদার থাকে না। সেখানে রেলওয়ের হাসপাতাল কলোনির স্টাফ এবং রেলের অন্যান্য বিভাগের স্টাফরা যুগ যুগ ধরে বসবাস করছেন। আমরা কেউ হাসপাতালের বিরোধী নয়। আমরা চাই রেলের অনেক পরিত্যক্ত জমি পড়ে আছে। সেই জমিতেই বেসরকারি হাসপাতাল হোক। তাহলে রেলও লাভবান হলো-হাসপাতালও হল। অপরদিকে রেলের স্টাফদেরকে উচ্ছেদের শিকার হতে হলো না। আমরা রেল প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই- হাসাপাতলের জমিটা অন্যত্র বরাদ্দ দেয়া জন্য।
একই কথা বলেছেন রেলওয়ে শ্রমিক লীগ সিআরবি শাখার সদস্য শান্তনু দাশও। তিনি বলেন, বেসরকারি হাসপাতালের জন্য যে জমিটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সেখানে হাসপাতালের স্টাফ-নার্সরা থাকেন।
এখান থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হলে কোনো দুর্ঘটনায় স্টাফ-নার্সরা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে উপস্থিত হতে পারবেন না।
এদিকে হাসপাতালের কাজ আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আহসান জাবির বলেন, আমরা জমি বুঝিয়ে দিলে কাজ শুরু হবে। ৬ একর জমি দুই ধাপে দেয়া হবে। প্রথম ধাপে ২ দশমিক ৪২ একর জমি দিলে কাজ শুরু হবে ফ্রেব্রুয়ারিতে। ২য় ধাপে বাকি ৩ দশমিক ৫৮ একর জমি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
জানা গেছে, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় ‘স্টাবলিস্টমেন্ট অব এ ফাইভ হান্ড্রেড বেড মাল্টি স্পেশালিটি হসপিটাল অ্যান্ড এ হান্ড্রেড সিট মেডিক্যাল কলেজ অন বাংলাদেশ রেলওয়ে সাইট ইন চিটাগাং’ নামক রেলের জমিতে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।