চট্টগ্রাম কাস্টমসে একাধিকবার প্রকাশ্য নিলামে তোলার পরেও বিক্রি না হওয়ায় সাড়ে তিন কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের খেজুর অবশেষে অনলাইনে নিলামে (ই–অকশন) তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। অনলাইনে নিলামে বিডারদের (নিলামে অংশগ্রহণকারী) জন্য পণ্য প্রদর্শনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে আজ মঙ্গলবার ও আগামীকাল বুধবার। যদিও গতকাল থেকে অনলাইনে প্রস্তাবিত দরমূল্য নেয়া শুরু হয়েছে। দরমূল্য নেয়া হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ফিরিঙ্গি বাজারের ব্রিজঘাট রোডের সালাম বিল্ডিংয়ের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসএসএ কর্পোরেশন ১০ হাজার ২৫৮ কার্টনে ৪৭ হাজার ৫০০ কেজি (সাড়ে ৪৭ টন) বিভিন্ন ধরনের খেজুর আমদানি করে। এরমধ্যে আজওয়া, মেজদুল ১৫ হাজার কেজি, সুগাই, সাফাউই, মাসরুক, সুকারি ও লুবনা খেজুর ছিল ৩২ হাজার ৫০০ কেজি। এসব খেজুর চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দুইবার প্রকাশ্য নিলামে তুলেও উপযুক্ত দর না পেয়ে বিক্রি করেনি। চট্টগ্রাম কাস্টমস এবার অনলাইন নিলামে এসব খেজুরের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করেছে ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৪৮ হাজার ১৭২ টাকা।
এদিকে জানা গেছে, পচনশীল পণ্যের দ্রুত নিলাম আয়োজনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্থায়ী আদেশ জারি করে। কিন্তু চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তাদের অনীহার কারণে সেই আদেশ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিগত সময়ে অনেক খাদ্যপণ্য পচে যাওয়ায় তা মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব পাওয়া দূরে থাক, উল্টো পণ্য ধ্বংসে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পচনশীল পণ্যসহ নিলামযোগ্য পণ্যের নিলাম দ্রুততার সাথে কার্যকর করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বিডাররা বলছেন, নিলামে এখনো কিছু ভোগান্তি রয়ে গেছে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে–পণ্য অনুমোদন দিতে বিলম্ব করা। এতে বিডারদের পে অর্ডার মাসের পর আটকে থাকছে। দ্রুততার সাথে পণ্যের বিক্রয় অনুমোদন দিলে কাস্টমস ও বিডার উভয়পক্ষের জন্য ভালো হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার এইচএম কবির জানান, বন্দর ইয়ার্ড খালি করার লক্ষে এনবিআরের নির্দেশনা মতে, চট্টগ্রাম কাস্টমসে নিয়মিত ই–অকশন ও প্রকাশ্য নিলাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খেজুরের এই লটটি এর আগে দুইবার প্রকাশ্য নিলামে তোলা হয়। কিন্তু বিডাররা যে দাম হাঁকিয়েছেন, সেটি সন্তোষজনক ছিল না। তাই এসব খেজুর এখন অনলাইন নিলামে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, আমদানি করা পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে আমদানিকারককে সরবরাহ নিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেওয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ চার্জ পায় না।









