সাহিত্যে নোবেল পেলেন আবদুল রাজাক গুরনাহ

লিখেছেন শিকড়হীন মানুষের বেদনার আখ্যান

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ৮ অক্টোবর, ২০২১ at ৭:২১ পূর্বাহ্ণ

সাহিত্যে এ বছর নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তানজানিয়ার ঔপন্যাসিক আবদুল রাজাক গুরনাহ, যার দরদি ভাষার দ্ব্যর্থহীন লেখায় ফুটে উঠেছে ঔপনিবেশিকতার দুর্দশা আর শরণার্থী জীবনের বেদনার আখ্যান। গতকাল বৃহস্পতিবার সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১১৮তম লেখক হিসেবে আবদুল রাজাক গুরনাহর নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
৭৩ বছর বয়সি তানজানিয়ার কথাসাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হল ঔপনিবেশিকতার অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে তাঁর আপসহীন সংগ্রাম এবং সংস্কৃতি ও মহাদেশীয় পরিসরে উদ্বাস্তু মানুষের কণ্ঠস্বরকে সাহসের সঙ্গে তুলে ধরার জন্য। গুরনাহর মোট ১০টি উপন্যাস এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে, যার একটি হল প্যারাডাইস অ্যান্ড ডিজারশন। ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত এ উপন্যাসের কাহিনী বিকশিত হয়েছে ২০ শতকের গোড়ার দিকে তানজানিয়ায় বেড়ে ওঠা এক বালকের গল্পকে কেন্দ্র করে। মূলত প্যারাডাইস অ্যান্ড ডিজারশন বুকার জেতার পরই ঔপন্যাসিক আবদুল রাজাক গুরনাহর নাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়াতে শুরু করে। আব্দুল রাজাকের জন্ম পূর্ব আফ্রিকার জাঞ্জিবারে, ১৯৪৮ সালে। ১৯৬০-এর দশকে তিনি উদ্বাস্তু হিসেবে ইংল্যান্ডে উপস্থিত হন। ১৯৬৩-তে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা থেকে জাঞ্জিবার মুক্ত হয়। কিন্তু সেই সময় সে দেশে শুরু হয় আরব-বংশোদ্ভূতদের বিরুদ্ধে অত্যাচার এবং গণহত্যা। আব্দুল রাজাক ও তাঁর পরিবার আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে পড়লে তাঁদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়। ১৯৮৪ সালের আগে তিনি আর স্বভূমিতে ফিরে যেতে পারেননি।
নোবেল জয়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, এত বড় একটি পুরস্কার, অসাধারণ সব লেখকদের পাশে তার নাম, এ তার বিশ্বাসই হতে চাইছিল না। আমি এতটাই বিস্মিত যে বিশ্বাস করার আগে নিজে কানে ওই ঘোষণা শোনা পর্যন্ত আমি সত্যি সত্যি অপেক্ষা করেছি।
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি বলেছে, সত্যের প্রতি আবদুল রাজাক গুরনাহর যে নিষ্ঠা, ঘটনার অতিসরলীকরণে তার যে ঘোর আপত্তি, পাঠককে তা নাড়া দেয়। তার উপন্যাস গতানুগতিক ধারাবর্ণনার রীতি থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের দৃষ্টির সামনে মেলে ধরে সাংস্কৃতি বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এক পূর্ব আফ্রিকাকে, যার সঙ্গে পৃথিবীর অনেক অঞ্চলের কোনো মিল নেই।
সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের শেষ ইচ্ছা অনুসারে গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবতার কল্যাণে অবদানের জন্য প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। গতবছর সাহিত্যে এ পুরস্কার পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কবি লুইস গ্লিক। বরাবরের মতই চিকিৎসা বিভাগের পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সোমবার চলতি বছরের নোবেল মৌসুম শুরু হয়। পরের দুই দিনে ঘোষণা করা হয় পদার্থবিদ্যা আর রসায়নের নোবেল। আজ শুক্রবার শান্তি এবং আগামী ১১ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধধোয়ামোছার কাজ শেষ, চলছে ডাইনিং-ওয়াশরুম প্রস্তুতি
পরবর্তী নিবন্ধইসি গঠন এবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে : তথ্যমন্ত্রী