আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ জানিয়ে যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, তার প্রতিবাদে দুই দিনের হরতালে ‘সাহসের ওপর ভর করে’ বুক চিতিয়ে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। হরতালের আগের দিন গতকাল শনিবার বিকেলে অজ্ঞাত স্থান থেকে ভার্চুয়াল বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি। তার এই বক্তব্য বিএনপির ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার হয়। খবর বিডিনিউজের।
রোববার ভোর ৬টা থেকে বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শান্তিপূর্ণ হবে জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের পক্ষ থেকে আমি এই হরতালকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য, এই হরতালকে বাস্তবায়ন করার জন্য সর্বমহলে, সর্বদিক থেকে আপামর জনসাধারণ প্রত্যেককে আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, দলের নেতা–কর্মী ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জোট ও দলের প্রতিও উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। সকলে সাহসের ওপর ভর করে বুক চিটিয়ে রাজপথে উপস্থিত হবেন।
রিজভী বলেন, ৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল হচ্ছে অধিকার আদায়ের হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে হরতাল, এই হরতাল হচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষকে অন্যায়ভাবে জুলুম–নিপীড়ন–নির্যাতন করে ফরমায়েসী রায়ে শাস্তি, যে ভয়ংকর এবং পৈশাচিক নির্যাতন করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হরতাল। অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে এই হরতাল। এই দাবি জনগণের দাবি। সারাদেশের মানুষ বহুদিন ধরে অধিকার বঞ্চিত, তাদের মালিকানা বঞ্চিত। জনগণের মালিকানা জনগণকে ফেরত দিতেই এই দুর্বার আন্দোলন।
বিএনপি নেতা বলেন, জনগণ রাজপথে নেমেছে অধিকার আদায়ের দুর্বার আন্দোলনে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে। আপনারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন, নির্বাচন স্থগিত করে আগে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় এই ফরমায়েসী এক তরফা নির্বাচন জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে।
কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বন্দিতে মহাবিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, অনেককে আটকে রেখে মুক্তিপণ নিচ্ছে পুলিশ। নেতা–কর্মীদের না পেয়ে তার স্বজন–আত্মীয়দের আটক করে মারধোর করছে তারা। শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার বাণিজ্যের লাইসেন্স দিয়েছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, কার্যত দেশে আইনের শাসনের মূলোউৎপাটন করা হয়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী দলের নেতা–কর্মীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে… তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে দেয়া হচ্ছে না।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩০২ জন এবং ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ হাজার ২১০ জনের বেশি নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগও আনেন রিজভী।