সারের অভাব এবং প্রকৃতির খামখেয়ালিতে হাসি মিইয়ে গেছে পতেঙ্গার সাগর পাড়ের সবজি চাষিদের। প্রচুর ফলন হলেও সারের অভাবে আকৃতি ছোট হয়ে গেছে। এতে করে অর্গানিক টমেটোসহ শীতকালীন বিভিন্ন সবজিতে মাঠ ভরে উঠেলেও সন্তুষ্ট নন চাষিরা। প্রচুর দাম থাকলেও ফলন বড় না হওয়ায় ওজনে কমে যাচ্ছে। নগরীর পতেঙ্গার আনন্দবাজারের ময়লার ভাগাড়ের পাশে সাগরপাড়ে গত কয়েক বছর ধরে সবজি বিপ্লব চলছে। প্রতিবছর এখান থেকে কোটি কোটি টাকার সবজি উৎপাদন এবং বিক্রি হয়। শীতকালীন সবজির মধ্যে টমেটোর চাষই বেশি হয়। এর পাশাপাশি বিস্তীর্ণ মাঠে ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউসহ নানা ধরনের শাক-সবজির ফলন চোখ জুড়িয়ে দেয়।
পতেঙ্গা উপকূলের চাষিদের বিশেষত্ব হচ্ছে তারা বিষমুক্ত অর্গানিক ফসল উৎপাদন করছে। বিশেষ করে আগাম টমেটো চাষ এলাকার কৃষকদের নিকট অত্যন্ত জনপ্রিয়। উর্বর মাটি, অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশসহ বিভিন্নমুখী সুবিধার কারণে সাগরপাড়ে কোটি কোটি টাকার ফলন হয়। মৌসুম শুরুর বহু আগেই এখানে বিশেষ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ শুরু হয়। বিষমুক্ত টাটকা টমেটোর তীব্র চাহিদায় কৃষকদের চোখে হাসি ফুটে উঠে। কিন্তু এবার কৃষকদের মুখে হাসি নেই। যদিওবা শত শত একর জমিতে লাগানো টমেটোর ফলন হয়েছে। শুরু হয়েছে বেচাবিক্রি। ক্ষেতের পাড়েই পাইকারিতে একশ টাকারও বেশি দামে প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ফলের সাইজ ছোট হওয়ায় উৎপাদন কমে গেছে। আগে যে গাছ থেকে দশ কেজি টমেটো পাওয়া যেত এখন তা থেকে ছয় সাত কেজির বেশি টমেটো পাওয়া যাবে না। কৃষকেরা বলছেন, সারের প্রচণ্ড অভাব। সার না থাকায় ক্ষেতের ফলন বড় হচ্ছে না। টিএসপি সারের দাম দ্বিগুণেরও বেশি। ১১শ টাকার মেমো দিয়ে ২২শ টাকা আদায় করছে এক বস্তা সার। তাও পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ মহসীন মিয়া। যিনি কোটি টাকার টমেটো বিক্রি করে বহুভাবে পুরস্কৃত এবং আলোচিত হয়েছেন। তিনি জানান, শীতকালীন টমেটো চাষ আগাম করতে গেলে প্রচুর খরচ হয়। শীতের আবহ তৈরি করে চারা জন্মানো কিংবা ক্ষেতে চারাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা অনেক কঠিন। প্রতিটি গাছের সাথে কঞ্চি বেঁধে সোজা রাখা, প্রয়োজনীয় সার দেয়া, সেচ দেয়াসহ নানা খাতে এক একটি গাছের পেছনে অন্তত ৫০ টাকারও বেশি খরচ হয়। এবার সারের দাম বৃদ্ধির ফলে এই খরচ অনেক বেশি পড়েছে। কিন্তু একটি গাছ থেকে ৫/৭ কেজির বেশি টমেটো পাওয়া যাবে না।












