সারা দেশে ২০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসা চতুর্থ

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির মূল্যায়ন।। চসিকের অবস্থান ১৪

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২০ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৫৭ পূর্বাহ্ণ

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) মূল্যায়নে গত অর্থবছরে (২০২০-২০২১) সারা দেশে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন চুক্তিবদ্ধ ২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসার অবস্থান চতুর্থ। তালিকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অবস্থান ১৪তম। সারা দেশে প্রথম হয়েছে ঢাকা ওয়াসা। স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি, ফলাফলধর্মী কর্মকাণ্ডে উৎসাহ প্রদান এবং কর্মকৃতি বা পারফরমেন্স মূল্যায়নের লক্ষ্যে সরকার ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ বা এপিএ প্রবর্তন করে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য ২০২০ সালের ২৬ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে চসিক ও চট্টগ্রাম ওয়াসাসহ ২০টি প্রতিষ্ঠান।
চুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলো পুরো এক বছরের কর্মপরিকল্পনা ও সম্ভাব্য অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা উপস্থাপন করে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার সম্ভাব্য প্রধান অর্জনের উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল- পানি সরবরাহ ৩৫০ এমএলডি থেকে ৩৬০ এমএলডি করা। ১৫০ কিলোমিটার নতুন পাইপ লাইন স্থাপন, ৩২ হাজার ত্রুটিপূর্ণ পানির মিটার পরিবর্তন করা।
একইভাবে চসিকের সম্ভাব্য প্রধান অর্জন হিসেবে বলা হয়, ৭৯ শতাংশ জনসচেতনতা বৃদ্ধিকরণ, ৯২ শতাংশ বর্জ্য পরিকল্পিতভাবে সংগ্রহ করা, ৫৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন, ১১০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার বা মেরামত, ২০০ কিলোমিটার সড়কবাতি স্থাপন, ২০০ কিলোমিটার সড়ক বাতি সংস্কার, ২০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ বা উন্নয়ন, ১৪০ কিলোমিটার ড্রেন সংস্কার, ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ, ১৬০ কিলোমিটার ফুটপাত সংস্কার বা মেরামত।
এপি’র নিয়ম অনুযায়ী, সম্ভাব্য অর্জনগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতির রির্পোট প্রতিমাসে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠাতে হয়। বছর শেষে এপিএ টিম চুক্তির প্রতিবেদন ও প্রমাণক ১০০ নম্বরে মূল্যায়ন করে। এর মধ্যে কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে ৭৫ নম্বর এবং আবশ্যিক কৌশলগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য ২৫ নম্বর বরাদ্দ ছিল। অবশ্য চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছর থেকে কার্যতালিকার জন্য ৭০ এবং আবশ্যিক কৌশলগত উদ্দেশ্যের জন্য নির্ধারণ করা হয় ৩০ নম্বর।
গত অর্থবছরের (২০২০-২০২১) এপিএ মূল্যায়নের প্রকাশিত ফলাফলে ১৪ তম হওয়া চসিক পেয়েছে ৮২ দশমিক ২০। চতুর্থ হওয়া চট্টগ্রাম ওয়াসা পেয়েছে ৯৫ দশমিক ০৪। মূল্যায়ন তালিকাটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে চসিকের অবস্থান ৭ম। সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে প্রথম এবং সার্বিক তালিকায় দ্বিতীয় হয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। দেশের অন্যান্য ওয়াসাগুলোর ( ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী) মধ্যে চট্টগ্রামের অবস্থান দ্বিতীয়।
প্রকাশিত ফলাফলে পিছিয়ে থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, দুইভাবে নম্বর প্রদান করা হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর থাকে কার্যক্রমের উপর। বাকি নম্বর দেয়া হয় ট্রেনিং, মিটিং ও ই-নথিসহ অন্যান্য বিষয়ের উপর। কার্যক্রমের উপর যে মূল্যায়ন সেখানে আমরা ৭০ এর মধ্যে ৬৯ দশমিক ৭৫ পেয়েছি। অন্যান্যে ক্ষেত্রে কম পেয়েছি। তার মানে আমাদের যে কাজ সেটা আমরা সঠিকভাবে করে যাচ্ছি। তারপরও ট্রেনিং, মিটিং ও ই-নথিসহ অন্যান্য বিষয়ের উপর আগামী থেকে যেন নম্বর পায় তার জন্য নজর দিচ্ছি। আমাদের চেষ্টা থাকবে চলতি অর্থ বছরে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানে থাকার।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, নগরবাসীর সুপেয় পানি নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গ্রাহকের বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি। এসব করায় মূল্যায়ন করেছে আমাদের। তবে কেবল চুক্তি করলেই হয় না। আমরা যে কাজ করেছি তার প্রমাণ দিতে হয়। এখানে ফাঁকি দেয়ার কোনো সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, একসময় একটা মিটার নিতে ছয় মাস থেকে এক বছর লেগে যেত। এখন খুব বেশি হলে তিন দিন লাগছে। একদিন দুইদিনের মধ্যেই আমরা মিটার দিচ্ছি। একসময় কোনো অভিযোগ নিয়ে এলে সমাধান হতে মাসের পর মাস চলে যেত। এখন আমি চেষ্টা করি দ্রুত সমাধান করতে। সর্বোচ্চ সাতদিনের মধ্যে সমাধান করি। যদি কম্প্লিকেটেড হয় সেক্ষেত্রে হয়তো কোর্টে চলে যায়। এসব কারণে আমাদের মূল্যায়ন করেছে। তবে আমাদের চেষ্টা ছিল তালিকার আরেকটু উপরে ওঠার জন্য।
তিনি বলেন, এখানে প্রাইজটা বড় কথা না। আমরা যেসব কাজের জন্য কমিটমেন্ট করেছি সে কাজগুলো কতটা করতে পারছি সেটাই আসল। আমরা কি করছি সেটা চট্টগ্রামবাসী জানেন। যেখানে দৈনিক ১২ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ক্ষমতা ছিল সেখানে ৫০ কোটি লিটারে উন্নীত করেছি। ভাণ্ডালজুড়ি প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তা ৫৬ কোটিতে উন্নীত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার
পরবর্তী নিবন্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফল ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকাশের নির্দেশ