হালনাগাদের পর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন, যাতে যুক্ত হয়েছে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জন নতুন ভোটারের নাম। নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের তথ্য জানিয়ে বলেন, দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
নতুন ভোটারদের নিয়ে দেশে এখন ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জনে। সবশেষ গতবছর ২ মার্চ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় ভোটার ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখের বেশি। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়েছেন, এ বছরের হালনাগাদে তারা যুক্ত হলেন।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চূড়ান্ত হওয়ার পর বাদ পড়া ও ভোটারযোগ্যদের তালিকাভুক্ত করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিবন্ধন তথ্য নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে এ এম এম নাসির উদ্দীন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। ৩০ জুনের মধ্যে এ কাজ শেষ করা হবে। খবর বিডিনিউজের।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আইন অনুযায়ী চলতি বছর হালনাগাদের যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হবে, তা অন্তর্ভুক্ত করে হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি। আর চূড়ান্ত তালিকা হবে আগামী বছরের ২ মার্চ। তিনি বলেন, যদি এর আগে জাতীয় নির্বাচন হয়, প্রয়োজন হলে অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ভোটার বেড়েছে দেড় শতাংশ : তালিকায় যুক্ত হওয়া নতুন ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫১৬ জন। নারী আছেন ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৪ জন। ৬২ জন হিজড়া। ২০২৪ সালের ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০ জন। এবার খসড়া তালিকায় সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ জন। সেই হিসাবে ভোটার বেড়েছে দেড় শতাংশ।
শুদ্ধতা যাচাই যেসব কারণে : বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুদ্ধতা যাচাই ও বাদ পড়াদের তথ্য সংগ্রহ শুরু হবে ২০ জানুয়ারি। ৩০ জুনের মধ্যে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।
২ জানুয়ারির আগে ভোটার হওয়ার আহ্বান ইসির : এই নির্বাচন কমিশনার মনে করেন, ভোটার তালিকার শুদ্ধতার অভাব মূলত তিনটি কারণে। একটা হলো মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ না দেওয়া। দ্বিতীয়ত, নির্দেশনা থাকার পরও কোথাও কোথাও দ্বৈত ভোটার, অর্থাৎ একই ভোটার দুই জায়গায় তালিকাভুক্ত হওয়ার আশঙ্কা। তৃতীয় কারণ হলো, অনেক বিদেশি নাগরিকও প্রতারণার মাধ্যমে তালিকায় ঢুকে গেছেন। আমরা সমপ্রতি একাধিক ঘটনা পেয়েছি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের যেসব তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি যান, তাদের অনেকেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা কোনো ব্যক্তির সহায়তা নেন। পত্রিকায় দেখেছি, ওই জনপ্রতিনিধি বা সহায়তাকারী ব্যক্তি নিজের পরিচিত কারণে ১৮ বছরের কম বয়সী অনেককে তালিকায় ঢুকিয়ে দেন। আবার যাকে তিনি পছন্দ করেন না, তার বয়স ঠিক হলেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে তালিকার বাইরে রাখেন।
৭টি দেশে প্রবাসীদের এনআইডি : প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের এনআইডি সেবা দিতে নিবন্ধন কার্যক্রম চালু হয়েছে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও ইতালিতে।