সাম্প্রতিক চট্টগ্রাম ও দৈনন্দিন টুকিটাকি

সাখাওয়াত হোসেন মজনু | সোমবার , ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র, চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্তের ফসল

৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ঐতিহাসিক ভাষণের পর বাঙালি জাতি দিক নির্দেশনা পেয়ে গিয়েছিলো। চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ‘চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদ’। আন্দোলনরত বাঙালিদের গতিপথ নির্দেশনার জন্য চট্টগ্রাম জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের নেতারা এই পরিষদ গঠন করেন। দায়িত্বে ছিলেন

১. জননেতা এম আর সিদ্দিকী- এম এন এ ও সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগ
২. জননেতা জহুর আহমদ চৌধুরী- এম পি এ ও সভাপতি, নগর আওয়ামী লীগ
৩. জননেতা এম এ হান্নান- সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগ
৪. জননেতা এম এ মান্নান- সাধারণ সম্পাদক, নগর আওয়ামী লীগ
৫. প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ- এম এন এ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিনিধি, সম্পাদক- দৈনিক আজাদী।
এদের নির্দেশে চট্টগ্রামের প্রশাসন পরিচালিত হতো। তারা ঢাকার সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন। ২৫ মার্চ রাত ১০ টার পর পাকিস্তানী বাহিনী যখন অপারেশন সার্চ লাইট পরিচালনা করে গণহত্যা আরম্ভ করে তখন বঙ্গবন্ধু রাত ১২ টার পর স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। একথা সবাই জানেন।
বঙ্গবন্ধুর’র স্বাধীনতা ঘোষণার পর চট্টগ্রাম কেমন ছিলো, কোন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় (প্রকৃত স্থান কালুরঘাট নয়) স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলো সে তথ্য নিয়ে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। কারণ এই বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা নিয়ে আমরা কিছু লেখক প্রকৃত তথ্যের বিভ্রান্তিতে পড়েছি। তাই প্রকৃত তথ্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছি।
২৫ মার্চ রাত ৯টা, চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন এম আর সিদ্দিকী’র লালখান বাজার বাসায়। আরো উপস্থিত ছিলেন আতাউর রহমান খান কায়সার (এম.এন. এ) ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন (এম.পি.এ) এবং আরো ক’জন তরুণ রাজনৈতিক কর্মী। সভা চলাকালীন সময় এম.আর সিদ্দিকী ফোনে বঙ্গবন্ধুর সাথে যোগাযোগ করে ঢাকার সর্বশেষ সংবাদ জানলেন এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা গ্রহণ করেছিলেন। তখন নেতারা নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সভা স্থানান্তরিত করেন জানে আলম দোভাষ এর ফিরিঙ্গী বাজার বাসায়। সেখানে সভা চলাকালীন সময়ে খবর এসেছে ঢাকায় পাকিস্তানী সৈন্য বাহিনী রাস্তায় নেমেছে, বাঙালি হত্যা শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। সমস্ত টেলিযোগাযোগ অনেকটা বন্ধ। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ওয়ারলেসর বিশেষ মাধ্যমে চট্টগ্রাম চলে আসে। বিপ্লবী নেতা জহুর আহমদ চৌধুরীর বাসায় এ সংবাদ এলে তা রিসিভ করেন তাঁর স্ত্রী ডা. নুরুন নাহার জহুর। তিনি এই ম্যাসেজ লিখে নিয়ে সংগ্রাম কমিটির সভায় অবস্থানরত জহুর আহমদ চৌধুরীকে প্রেরণ করেন। নেতারা তখন এটি রাতেই প্রচারের জন্য নেতাকর্মীদের কাছে দ্রুত পাঠিয়েছেন। এই স্বাধীনতা ঘোষণার সংবাদে ছাত্রলীগ কর্মীরা মাইক দিয়ে, চোঙ্গা মাইক ও মিছিল করে স্লোগানে স্লোগানে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রচার করতে থাকেন। তারা সিদ্ধান্ত নেন বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা চট্টগ্রাম রেডিও থেকে প্রচার করবেন।
এরপর সকাল ৯টায় (২৬ মার্চ) চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতারা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু’র জুপিটার হাউজের বাসায় বৈঠকে বসেন। সিদ্ধান্ত মতে চট্টগ্রাম রেডিও থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করার। এই সিদ্ধান্তকে কার্যকর করার জন্য আতাউর রহমান খান কায়সার তাঁর ল্যান্ডরোভার সাদা রং এর জিপ নিয়ে আসেন আগ্রাবাদ রেডিও স্টেশনে। সেখানে এসে তিনি জানতে পারেন আগ্রাবাদ রেডিও স্টেশন পাকিস্তানী নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজের শেলিং এর আওতায় রয়েছে। তারা যদি শেলিং শুরু করে তাহলে রেডিও স্টেশন গুঁড়িয়ে যাবে। তখন তারা বললেন, আপনারা চান্দগাঁও রেডিও সম্প্রচার স্টেশন থেকেও অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে পারবেন, তবে প্রয়োজন হবে কেন্দ্র খোলা এবং টেকনিক্যাল কাজের জন্য ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিক্যাল কর্মীর। সে অনুযায়ী আতাউর রহমান খান কায়সার, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এম.এ. হান্নান, ডা. এম.এ মান্নান আসেন আগ্রাবাদ সি.জি.এস কলোনিতে।আরো ছিলেন শাহ-ই-জাহান চৌধুরী, রাখাল চন্দ্র বণিক, মনসুর আহমদ প্রমুখ ছাত্রনেতারা। কলোনিতে এসে সেখানের বাসিন্দা সরকারি অফিসার এম.এ হালিম এর সহযোগিতায় রেডিও’র প্রধান প্রকৌশলী মির্জা নাসির উদ্দিনকে সি জি এস কলোনির বাসা থেকে নিয়ে তাঁরা রওয়ানা হয়েছিলেন সেই চান্দগাঁও রেডিও স্টেশনের দিকে। পথ থেকে তুলে নেন প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনসহ আরো ক’জন রেডিও’র প্রকৌশল বিভাগের কর্মীকে। নেতৃবৃন্দ যখন আগ্রাবাদ সি জি এস কলোনি যান, দেখতে পান কয়েকশত মানুষ মিছিল করছে, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, এলাকাবাসিকে জানাচ্ছেন স্লোগানে স্লোগানে। তারা জানতে পারেন কলোনি মসজিদের মাইক থেকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন একথা সাইকে ঘোষণা করেছেন কলোনি এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ। তখন মাইকে এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফি উদ্দিন আহমদ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা সংক্ষিপ্তসার লিখে এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক-কে প্রদান করেন। তখন মোজাম্মেল সাহেব বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি মাইকে পাঠ করে শোনান। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, সি ডি এ আবাসিক এলাকার ডা. আনোয়ার আলী এবং তাঁর স্ত্রী মনজুলা আনোয়ার বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ করে পুরো এলাকায় বিলি করেছিলেন। সে স্বাধীনতা ঘোষণার অনুবাদটি সংক্ষিপ্ত করে কলোনি মসজিদের মাইক থেকে তিনবার পাঠ করেন আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক। একবার সকাল ৮ টায়, একবার সকাল ১০ টায় এবং শেষবার সকাল ১১ টায়। এসময় আগ্রাবাদ কলোনিতে আসেন সি.ডি.এ আবাসিক এলাকার হাবিবুর রহমান কন্ট্রাক্টর। তিনি তাঁর গাড়ি ভঙওয়াগন চট্টগ্রাম-খ-৪৫ নম্বরে করে এম.এ হালিমসহ আরো ক’জনকে নিয়ে চাঁন্দগাও রেডিও স্টেশনে পৌঁছান। পথে আরো অনেক ঘটনা ঘটেছে, অনেকে এর সাথে যুক্ত হয়েছেন (বিস্তারিত তথ্য অনেক গ্রন্থে আছে)।
রেডিও প্রকৌশলী, টেকনেশিয়ানরা প্রয়োজনীয় সংযোগ স্থাপন করে রেডিও স্টেশন প্রস্তুত করলেন। পুরো দায়িত্ব তখন আতাউর রহমান কায়সার, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, এম.এ হান্নানসহ রাজনৈতিক নেতাদের হাতে। তাঁদের নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি হলো স্ক্রিপ্ট। মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়ালেন বিপ্লবী ছাত্রনেতা, উত্তর মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি রাখাল চন্দ্র বনিক। নেতাদের নির্দেশনায় তিনি মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়ালেন অনুষ্ঠান ঘোষণার জন্য। নেতারা জানতেন রাখাল চন্দ্র বনিকের কন্ঠ সুন্দর, হাতের লেখা সুন্দর। মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি নির্ধারিত স্ক্রিপ্ট থেকে পড়লেন, আপনারা যারা রেডিও খুলে বসে আছেন রেডিও বন্ধ করবেন না, একটু পরই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বাণী পাঠ করবেন চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক জনাব এম.এ হান্নান। এই ঘোষণা তিনি অন্তত: ৫ মিনিট বার বার পাঠ করেছিলেন (ঘোষণার সময় চট্টগ্রাম রেডিও’র নামকে বলেছিলেন স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র)। তারপর মাইক্রোফোনের সামনে এম.এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করে আবেগপ্রবণ বক্তব্য রেখেছিলেন।
যেহেতু সময়টি বেতার সময় ছিলো না তাই বঙ্গবন্ধুর পক্ষে এম.এ হান্নানের স্বাধীনতার ঘোষণাপাঠ কেউ কেউ শুনলেও অনেকেই শুনতে পাননি। সেদিন ২৬ মার্চ দুপুর ২.০৫ মিনিটে স্বাধীনতার ঘোষণা রেডিও’তে প্রচার হয়েছিলো এবং এটি ছিলো স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের প্রথম অধিবেশন। পরিচালনা, পরিকল্পনায় ছিলেন চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদ ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের রাজনৈতিক চিন্তার ফসল। সেদিন ছিলো শুক্রবার, বিকেলে রেডিও স্টেশনে আসেন বেলাল মোহাম্মদের নেতৃত্বে একদল বেতারকর্মী। তারা এসে পরিচালনা করেন পরিকল্পিত ভাবে। সেদিন সন্ধ্যা ৭.৪০ মিনিটে ২য় অধিবেশন, রাত ১০ টায় পরিচালিত হয় হ্যালো ম্যান কাইন্ড ইংরেজি অনুষ্ঠান রঙ্গলাল দেব চৌধুরীর প্রযোজনায়। অর্থাৎ সেদিন ও রাতে রেডিও’র ৩টি অধিবেশন চলেছিল। বলা যায় এভাবে
১ম অধিবেশন- চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে, নির্দেশনায় স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো, সাথে ছিলেন রেডিও’র প্রকৌশল শাখার কর্মীবৃন্দ।
২য় অধিবেশন- সন্ধ্যা ৭.৪০ মিনিটে রেডিও কর্মীদের পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশনায়।
৩য় অধিবেশন- রাত ১০টায় ইংরেজি অনুষ্ঠান ‘হ্যালো ম্যান কাইন্ড’ রেডিও কর্মীদের পরিকল্পনা এবং রাজনৈতিক নির্দেশনায়।
আমরা অনেকেই লিখেছি এবং বলার চেষ্টা করেছি যে, ২৬ মার্চ বিকেল থেকেই স্বাধীন বাংলা বেতার চালু হয়েছে। এটা বলে বা লিখে ২৬ মার্চের প্রথম অধিবেশনকে গুরুত্বহীন করার চেষ্টা করেছিলেন। প্রথম অধিবেশন যদি না হতো তাহলে স্বাধীনতার ঘোষণায় এম.এ হান্নান এর অবস্থান কোথায়? স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র ২৬ মার্চ দুপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়, চালু হয়। অনেকে এম.এ হান্নান এর কন্ঠে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছেন। এই সংবাদ প্রচার হওয়ার পরই চট্টগ্রাম রেডিও’র নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে ২য় অধিবেশন চালু করার জন্য চান্দগাঁও রেডিও স্টেশনে গিয়ে দেশ জাতির জন্য বিশাল ভূমিকা রেখেছিলেন।
এখানে বলা প্রয়োজন যে, ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ১ জুন রণাঙ্গনে সূর্যসৈনিক গ্রন্থটি লিখেছিলাম। সে গ্রন্থের ভূমিকা লিখেছিলেন চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের বঙ্গবন্ধুর প্রতিনিধি সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ। সে গ্রন্থের ২৪ থেকে ৩৪ পৃষ্ঠার ‘যাত্রা হলো শুরু: স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার’। এই প্রবন্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, এম.এ হান্নান ও চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের তথ্যগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিলো। এই গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়েছিলো ২১ অক্টোবর ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর মোহাম্মদ খালেদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আতাউর রহমান খান কায়সার, আবুল মোমেন, ডা. মাহফুজুর রহমান, রাখাল চন্দ্র বণিক, ফাহিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, ড. মাহবুল হক, মাহবুব হাসান, ফজল হোসেন, আমিনুর রহমান, ডা. সুলতানুল আলমসহ সে সময়ের বেতার কেন্দ্রের ১ম থেকে ১৩তম অধিবেশনের অনেক প্রত্যক্ষ পরোক্ষ কর্মী। এই লেখা সম্বন্ধে পরবর্তী সময় ভোরের কাগজকে আতাউর রহমান খান কায়সার বলেছিলেন, … এখানে তথ্যে বিভ্রান্তি নেই। শুধু কিছু মানুষের নাম বাদ পড়েছে মাত্র।
এই লেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে তথ্যের বিভ্রান্তি দূর করা, চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের ভূমিকা তুলে ধরা, রাজনৈতিক নেতা কর্মী, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের ভূমিকা স্বীকার করা এবং স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের ২৬ মার্চের প্রথম অধিবেশনের সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরা। শেষ কথা হচ্ছে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা পেয়েছে চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নির্দেশে এম.এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন, চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদের নির্দেশে রাখাল চন্দ্র বনিক অনুষ্ঠান ঘোষকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন সে সময় উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে। এখানে একক কোন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তির সিদ্ধান্তে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি (এই সংক্ষিপ্ত তথ্যটি শুধু স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও প্রথম অধিবেশন নিয়ে। অনেকের নাম বাদ পড়েছে দুঃখিত)। বলা প্রয়োজন যে, অসহযোগ ও প্রতিরোধ আন্দোলনের সময় রেডিও’র কর্মীরা নিজস্ব রেডিও ব্যবস্থা বা গোপন সম্প্রচার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা ভেবেছিলেন। তারা বেতার প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন চট্টগ্রাম সংগ্রাম পরিষদ, সাথে ছিলেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, প্রথম অধিবেশনের পর বেলাল মোহাম্মদ, আবুল কাসেম সন্দ্বীপ ও অন্যান্য বেতারকর্মীরা চান্দগাঁও রেডিও’র সম্প্রচার কেন্দ্রে গিয়ে দ্বিতীয় অধিবেশন থেকে বেতার কেন্দ্রের প্রচার শুরু করেন পরিকল্পিত ভাবে।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

পূর্ববর্তী নিবন্ধউন্নয়নের জন্য চাই জনবান্ধব প্রশাসন ও দক্ষ জনশক্তি
পরবর্তী নিবন্ধতিস্তা : বিকল্প পথে বাংলাদেশ