কয়েকমাস কমলেও করোনা সংক্রমণের হার এখন ফের উর্ধ্বমুখি। চট্টগ্রামে বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণের হার ৭/৮ শতাংশ দেখালেও বিদেশগামীদের পরীক্ষাকৃত নমুনার হিসেব আলাদা করলে দৈনিক সংক্রমণের এ হার প্রকৃতপক্ষে ১৫ শতাংশের বেশি। অথচ মাসখানেক আগেও সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের কম ছিল। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা বলছেন-টিকাদান শুরুর পর করোনা নিয়ে মানুষের উদাসীনতা আরো বেড়েছে। যেন এক ধরনের অবহেলা কাজ করছে মানুষের মাঝে। যার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা, অধিকাংশের মুখে মাস্কটিও দেখা যাচ্ছে না। অনেকে মাস্ক পরলেও তা হয় থুতনিতে, নয়তো গলায় ঝুলতে দেখা যায়। তাছাড়া বিয়ে-গায়ে হলুদ, উৎসব, মেজবানসহ সব ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান হচ্ছে হরহামেশাই। এসব অনুষ্ঠানে শারীরিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না কেউ। এতে করে সংক্রমণ আবারো বাড়ছে হুহু করে।
মানুষের উদাসীনতা ও অবহেলার কারণেই করোনার সংক্রমণ আবারো বাড়ছে বলে মনে করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তিনি বলেন-
ইদানিং উৎসব, মেজবানসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেন বেড়ে গেছে। এসব অনুষ্ঠানে প্রচুর জনসমাগম হচ্ছে। বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানার উদাহরণ নেই বললেই চলে। বেশির ভাগের মুখে মাস্কও চোখেও পড়ে না। এসব অনুষ্ঠান ও বিনোদন কেন্দ্র থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে হলে এসব সামাজিক অনুষ্ঠানের এখনই লাগাম টানতে হবে। রোববার অনুষ্ঠিত জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন- আমরা পরামর্শ দিয়েছি। স্বাস্থ্য বিধি মানা ও মাস্ক পরা নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনরায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথা জানানো হয়েছে। সামাজিক-রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি একই সাথে বিনোদন কেন্দ্রগুলো নিয়েও ভাবতে হবে বলেও মন্তব্য করেন সিভিল সার্জন।
অন্যদিকে, করোনার টিকা আসার পর মানুষের মাঝে করোনা নিয়ে গাফিলতি বেড়েছে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের উদ্যোক্তা ও প্রধান নির্বাহী ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া। তিনি আজাদীকে বলেন-করোনার টিকা নিলেও মুখে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্য বিধি অবশ্যই মেনে চলার বিকল্প নেই। এটাতে কোন রকম গাফিলতি করা যাবে না। কারণ, দুই ডোজ টিকা নেয়ার পরও শরীরে এন্টিবডি (প্রতিরোধ ক্ষমতা) তৈরিতে আরো একমাস সময় লাগে। তাই নিজে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি পরিবারকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখতে মাস্ক পরার পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।