সামনে আরও যুদ্ধ আছে

কোভিড-১৯

| সোমবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ‘ভালো কাজ করলেও’ সামনে আবারও সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন কোভিড-১৯ প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় কারিগরী পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। গতকাল রোববার ঢাকার একটি হোটেলে সোসাইটি অব সার্জনস অব বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি ডা. শহীদুল্লাহ বলেন, শুরুতে পৃথিবীর অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশও ‘হতবিহ্বল’ হয়ে পড়েছিল। তবে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ‘সামাল দিয়েছে’। সক্ষমতা অর্জন করেছে। আগামীতে সংক্রমণের সম্ভাব্য ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ এর জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, যুদ্ধ সামনে আছে। সরকার নানা পদক্ষেপ নেওয়ায় এখন সংক্রমণের হার এবং মৃত্যু দুটোই কমেছে। তবে এখনও শৈথিল্য দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। নিজেদের সুরক্ষিত রেখে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে, সেবা বন্ধ রাখা যাবে না। খবর বিডিনিউজের।
গত বছর ডিসেম্বরে চীন থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া নতুন এই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে চার কোটির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ১১ লাখের বেশি মানুষের। সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ লাখ ৮৮ হাজারে। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৬৬০ জনের। নানা বিধিনিষেধে বিভিন্ন দেশে মহামারীর প্রকোপ কমিয়ে আনা গেলেও আবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের মতো শীতপ্রধান অনেক দেশে ঋতু পরিবর্তনের পর দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ শুরু হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অনেকের ধারণা। বাংলাদেশেও শীত মৌসুমে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। সেই শঙ্কার কথা জানিয়ে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। সরকার প্রধানের নির্দেশনার পর রোডম্যাপ ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলার কথা বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ওষুধ বা কোনো টিকা মানুষ এখনও তৈরি করতে পারেনি। ফলে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া কোভিড-১৯ এড়ানোর আর কোনো কৌশল আপাতত মানুষের জানা নেই।
ডা. শহীদুল্লাহ বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা কবে আসবে তা কেউ জানে না। সুতরাং সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তিনি বলেন, মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা-এগুলো কোনো রকেট সায়েন্স নয়। এই তিনটি কাজ করতে পারলে আমি মনে করি আমরা সেকেন্ড ওয়েভ থেকে হয়তো দূরে থাকব।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, টিকা তৈরি হলে বাংলাদেশ যাতে তা পায়, সেজন্য বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানেন। উনারও একটা নির্দেশনা আছে, আমরা সেইভাবে কাজ করছি। আপনারা অল্প কিছু দিনের মধ্যেই জানতে পারবেন, আমরা কোন ভ্যাকসিন নিতে পারব। আমরা ওই ভ্যাকসিন নেব যেটা তাড়াতাড়ি, সুলভ মূল্যে পাওয়া যাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তালিকায় বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকের তিনটি টিকার নাম থাকার বিষয়টি ‘গণমাধ্যমে জেনেছেন’ বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেবা সংস্থার কাজ শেষ হলে সুফল ভোগ করবে নগরবাসী
পরবর্তী নিবন্ধদুর্গাপূজা উপলক্ষে মমতাকে শেখ হাসিনার উপহার