বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়–ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করেছে বিএনপি। গতকাল রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা এ মামলার আসামির তালিকায় দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করা তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ১৯ জনের নাম রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান এ মামলার বাদী, যিনি একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবী মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। উক্ত ঘটনার সাক্ষী সকল ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা। এছাড়া ভোট কেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরো অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে। এছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে উল্লেখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবে। সালাউদ্দিন খানের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল বেলা ১১টার দিকে শেরেবাংলা নগর থানায় গিয়ে মামলার কপি ও দস্তাবেজ ওসি ইমাউল হকের কাছে হস্তান্তর করেন।
কাগজগুলো হাতে পাওয়ার পর ওসি ইমাউল হক বলেন, বাদীদের ভাষ্যমতে বিগত সময়ে নির্বাচন কমিশনে যে কর্মকর্তারা ছিলেন, তারা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্ত্বেও তারা তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেননি। উল্টো তারা ভয় ভীতি দেখিয়ে ভোট সম্পন্ন করেছেন এবং জনগণের ভোট ছাড়াই প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করেছেন বলে বাদীর অভিযোগ। এভাবে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের বিজয় ঘোষণা করা বাদীর দৃষ্টিতে দণ্ডনীয় অপরাধ। সে সমস্ত অপরাধের একটা ফিরিস্তি নিয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটা অভিযোগ দায়ের করেছেন বাদী। কোন আইনের কোন ধারায় মামলাটি হচ্ছে জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমরা পর্যালোচনা করে মামলাটি রেকর্ড করার ব্যবস্থা করছি।