গ্রাহকের দুই কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে নগরীর ইস্টার্ন ব্যাংক চান্দগাঁও শাখার সাবেক প্রায়োরিটি ব্যাংকিং ম্যানেজার ও পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মো. ইফতেখারুল কবিরকে ৫৪ বছরের কারাদণ্ড ও এক কোটি ৭২ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।
একই সাথে ইফতেখারুলের সহযোগী লাবিবা ট্রেডিং নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড ও ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা, জুলেখা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আবদুল মাবুদকে সাড়ে ৬ বছরের কারাদণ্ড ও ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং মাহমুদ হাসান ও আজম চৌধুরী নামের অপর দুই ব্যক্তিকে সাড়ে ৬ বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় ইফতেখারুলসহ পাঁচ আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে গত ২৫ জুলাই ও ২৩ জুন ইস্টার্ন ব্যাংক চান্দগাঁও শাখার পৃথক দুটি আত্মসাৎ ঘটনায় ইফতেখারুলকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের একটি ধারায় মো. ইফতেখারুল কবির ও তার চার সহযোগীকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পাঁচজন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের এ কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে সালাউদ্দিন নামের এক গ্রাহক ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে ১১টি স্থায়ী আমানত (এফডিআর) রাখার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তার কাছ থেকে কয়েকটি চেকে সই নিয়ে নেন ইস্টার্ন ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক ইফতেখারুল কবির। পরবর্তী সময়ে জাল সইয়ের মাধ্যমে অন্যান্য আসামির সহায়তায় দুই কোটি ৮৪ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। আদালত সূত্র আরো জানায়, চেকে সই নেয়ার পাশাপাশি অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার ফরমেও কৌশলে ভুক্তভোগীর সই নিয়ে নেয়া হয়। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাদী হয়ে ইফতেখারুলসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের দেয়া চার্জশিট আমলে নিয়ে এবং চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।