সাবেক ডেপুটি স্পিকার, ছয়বারের সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আগরতলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কর্নেল (অব.) শওকত আলী (৮৪) গতকাল সোমবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। গতকাল বাদ মাগরিব তাঁর নামাজে জানাজা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। কর্নেল শওকত আলীর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন-রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় ৫ম পৃষ্ঠার ১ম কলাম
সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবর্গ, জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ, চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন প্রমুখ। তারা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সাবেক ডেপুটি স্পিকার অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শওকত আলীকে ফুলেল শ্রদ্ধায় বিদায় জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ, তার প্রতি জানানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্মান। গতকাল সোমবার বিকালে শওকত আলীর কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নেওয়া হলে সেখানে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সহকারী সামরিক সচিব কর্নেল রাজু আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাজিব আহমেদ ফুল দিয়ে শওকত আলীর কফিনে শ্রদ্ধা জানান। জাতীয় সংসদের স্পিকারের পক্ষে ফুল দেন উইং কমান্ডার সাঈদ মো. ওবায়দুল্লাহ। এরপর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মুক্তিযুদ্ধ সংহতি পরিষদের নেতৃবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শওকত আলীর পরিবার-পরিজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শওকত আলীর ছেলে খালেদ শওকত আলী জানান, সশস্ত্র বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তার বাবার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়ায় তাদের গ্রামের বাড়িতে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নড়িয়া শহীদ মিনারে রাখা হবে শওকত আলীর কফিন। জোহরের পর নড়িয়া বি এল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে নিজের বাড়ি স্বাধীনতা ভবনের আঙিনায় চির নিদ্রায় শায়িত হবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে শওকত আলীকে অন্যতম আসামি করা হয়। রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও বাংলা একাডেমির আজীন সদস্য ছিলেন কর্নেল শওকত। কয়েকটি অসাধারণ বইয়ের রচয়িতা তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘সত্য মামলা আগরতলা’, ‘কারাগারের ডায়েরি’ এবং ‘গণপরিষদ থেকে নবম সংসদ’।