ময়মনসিংহে রেলওয়ে পুলিশের হাতে ব্যাগভর্তি নগদ টাকা, এফডিআরের চেক, মাদকসহ গ্রেপ্তার হওয়ার তিন বছর পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক জেলার মো. সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এবার ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে সম্পদের তথ্য গোপন করার অপরাধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ (সজেকা-১) এ মামলাটি দায়ের করেন কার্যালয়ে সংযুক্ত উপ-পরিচালক মো. আবু সাঈদ। মামলায় ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে দুই কোটি ৩৩ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪০ লক্ষ ২৭ হাজার ২৩৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ করা হয়। মামলার বিষয়টি বাদী দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবু সাঈদ নিজেই দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেন। মো. সোহেল রানা বিশ্বাস ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানার পোড়া কান্দুলিয়া গ্রামের মো. জিন্নাত আলী বিশ্বাসের ছেলে। তিনি রেলওয়ে পুলিশের হাতে আটকের সময় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বরে দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস। সম্পদ বিবরণীতে ২ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৯৩ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য দেন তিনি। কিন্তু দুদক অনুসন্ধানে স্থাবর-অস্থাবর মিলে ৩ কোটি ৬ লক্ষ ৭০ হাজার ১২৬ টাকার সম্পদের তথ্য পায়। এতে তার বিরুদ্ধে ৪০ লক্ষ ২৭ হাজার ২৩৩ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
অন্যদিকে সোহেল রানা বিশ্বাসের তিন কোটি ২৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ১২৬ টাকার সম্পদ অর্জনের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস থেকে মাত্র ৯১ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৯০ টাকার সম্পদের তথ্য পায় দুদক। এতে তার বিরুদ্ধে দুই কোটি ৩৩ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তার অর্জিত সম্পদ জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ উল্লেখ করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে ময়মনসিংহগামী বিজয় এঙপ্রেসের একটি বগি থেকে সাবেক জেলার সোহেল রানাকে একটি ব্যাগসহ আটক করে রেল পুলিশ। তার ওই ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার তিনটি এফডিআরের কাগজ, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার তিনটি ব্যাংক চেক, পাঁচটি চেক বই ও ১২ বোতল ফেনসিডিল পাওয়া যায়। পরে তার বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করে রেল পুলিশ।
