সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

মেহেদির রং না মুছতেই স্বামীহারা কলি

চকরিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ৩০ নভেম্বর, ২০২০ at ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ায় নিজেদের কেনা জায়গা দখল করে নেওয়ার খবরে বাধা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন পৌরসভা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহেল রানা (২৮)। গত শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরী হাজিপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের পালাকাটা হাসেম মাস্টার পাড়ার আবদুর রকিমের পুত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার পর সোহেলকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ গতকাল রোববার সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনার পরপর হামলায় জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নাম আবদুল মান্নান (৩৪)। তিনি হাজিপাড়ার কবির আহমদের ছেলে।
নিহত সোহেলের বাবা আবদুর রকিম জানান, ভরামুহুরী হাজিপাড়ায় তাদের কেনা একটি জায়গা রয়েছে। সেই জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা চালায় ভূমিদস্যু সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে তার ছেলেসহ কয়েকজন সেখানে ছুটে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে একা পেয়ে হাজিপাড়ার নুরুল আলম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা সোহেলকে পেছন থেকে হাতুড়ি, গাছের বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফ হোসেন বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি বলেন, এখনো (গতকাল সন্ধ্যা) পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে থানায় মামলা নেওয়া হবে। চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. তফিকুল আলম আজাদীকে বলেন, জমির বিরোধ নিয়ে এই হামলার ঘটনায় আরো যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে রয়েছে। ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা পলাতক রয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিয়ের ২৪ দিনের মাথায় স্বামীহারা : সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মো. সোহেল রানা বিয়ে করেছিলেন গত ৪ নভেম্বর। পেকুয়া উপজেলা কৃষকলীগ নেতা মেহের আলীর কন্যা কলির সঙ্গে ২৪ দিন আগে বিয়ে হয়। মেহেদির রং না মুছতেই স্বামীকে হারালেন কলি। স্বামীকে হারিয়ে বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন তিনি। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না কেউ।
মর্মান্তিক এই ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুনের ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অবিলম্বে সোহেলের খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোচ্চার অনেকে।
স্বজনের আর্তনাদ : আবদুর রকিম দম্পতির একমাত্র পুত্র সন্তান ছিলেন সোহেল। সোহেলের ছোট একটা বোন রয়েছে। সোহেল খুন হওয়ায় স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ। এদিকে গতকাল বিকালে বাড়ির সামনের খোলা বিলে অনুষ্ঠিত হয় তার নামাজে জানাজা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনজরদারিতে ২৫ ব্যক্তি
পরবর্তী নিবন্ধপরামর্শক কমিটির সুপারিশ যৌক্তিক, বাস্তবায়ন কঠিন