প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গ করে ৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক জুয়েল দেব এর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নগরীর দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকার এম সাইফুদ্দিন সৈয়দ নামের এক ভুক্তভোগী।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী এড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
মামলায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন-সাবিহা তাসনিম তানিম (৩৫), নুরুল করিম চৌধুরী (৬০), মাহামুদুর রহমান চৌধুরী প্রকাশ মান্না (৫০), মোহাম্মদ টিপু রহমান (৩৭) ও নজরুল ইসলাম অপু (৪৫)।
মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘২০২৩ সালের ১৪ আগষ্ট সকাল ১০টার দিকে অভিযুক্তরা বাদিকে গাড়িতে তুলে চট্টগ্রাম রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স এর চান্দগাঁও সাব রেজিস্ট্রি অফিসের নিচ তলায় নিয়ে যান। পরে দুপুর ১২টার দিকে জোরপূর্বক একটি সাব কবলা দলিলে স্বাক্ষর নেন। দলিলে কি লিখা ছিলো তাও পড়তে দেননি।
পরে জানতে পারেন ভুক্তভোগীর তিন গন্ডা জমি ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা মূল্য দেখিয়ে লিখে নিয়েছেন। বাদির দাবি প্রকৃত মূল্য ছিলো ৪ কোটি টাকার উপরে। পরে বাদিকে ৩০ লক্ষ টাকার দুটি ও একটি ২৭ লক্ষ টাকার পে-অর্ডারসহ মোট ৮৭ লক্ষ টাকার মূল কপি দিয়ে জানান আগামী এক মাসের মধ্যে বাকি ৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা হবে। তখন জমির দলিল ও সমস্ত মূল কপি নিয়ে মেয়র অফিসে দেখা করতে বলে চলে যান।
পরে একই বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে নগরীর টাইগার পাস এলাকার অফিসে গেলে সুকৌশলে সমস্ত পে-অর্ডার আর কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে অভিযুক্তরা লেনদেন অস্বীকার করেন। গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর ভয়ভীতি কেটে গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন বলে আবেদনে উল্লেখ করেন।
ভুক্তভোগী এম সাইফুদ্দিন সৈয়দ বলেন, ‘অভিযুক্তরা বিশ্বাসভঙ্গ করে প্রতারণাপূর্বক পূর্ব ষোলশহর মৌজার ৬ দশমিক ৮ শতক জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানসহ আমার ভিটে ভূমি দখলে নিয়ে পাওনা ৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাই ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে বাদিপক্ষের আইনজীবী এড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘দন্ডবিধি ৩৪১, ৩৮৬, ৩৮৭, ৪০৬, ৪২০, ৫৯৬ (৩) ৩৪ ধারায় সাবেক মেয়রসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন এম সাইফুদ্দিন সৈয়দ নামে এক ব্যক্তি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) কে নির্দেশ দিয়েছেন।’