আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর ৮২টি ব্যাংক হিসাবে ৫৪৮ কোটি টাকা মোট লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ফেনী ২ আসনের সাবেক এ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানে নেমে এসব তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। এসব অ্যাকাউন্টে ২৮০ কোটি টাকার বেশি জমা পড়েছে আর উত্তোলন করা হয়েছে ২৬৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা; বর্তমানে জমা আছে ১২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
অনুসন্ধান শেষে গতকাল বুধবার নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৪ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১ এ এই মামলা দায়ের করেন। এ মামলার এজাহারে ব্যাংক হিসাবে বিপুল অঙ্কের টাকা লেনেদেনের এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেছেন, সংস্থার উপপরিচালক মোহাং নূরুল হুদা এ মামলা দায়ের করেছেন। খবর বিডিনিউজের।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, নিজাম উদ্দিন হাজারীর এসব ব্যাংক হিসাবে ৫৪৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে দুদকের অনুসন্ধানে। আসামি মো. নিজাম উদ্দিন হাজারী সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালনকালে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা টাকা বৈধকরণের জন্য তিনি তার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে এসব সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক লেনদেন করেছেন। এসব ব্যবসাসমূহে যে পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করেছেন, তার তুলনায় অনেক বেশি অর্থ সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক অসংখ্য লেনদেনের মাধ্যমে হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করেছেন বলে মনে করছে দুদক।
এজাহারে বলা হয়, নিজাম হাজারী ২০১১ সালে ফেনী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। পরে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০১৪ সালের পর থেকে টানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পাবলিক সার্ভেন্ট ছিলেন এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, যার কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
আসামির বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২), ৪ (৩) ধারায় ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় মামলাটি করেছে দুদক।