শুল্কমুক্ত সুবিধায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্যদের (এমপি) আনা বিলাসবহুল ২৪টি ল্যান্ডক্রুজার গাড়িসহ ৪৪ গাড়ি নিলামে তুলেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। আগ্রহী বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) চট্টগ্রাম কাস্টমসের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দরপত্র দাখিল করতে পারবেন। চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, সাবেক এমপিদের ২৪ বিলাসবহুল গাড়ির প্রতিটির সংরক্ষিত দাম ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৬৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯৯ টাকা। অপরদিকে নিলামে তোলা হচ্ছে ১০টি ডাম্প ট্রাক, ৫টি হ্যারিয়ার, দুটি রেভফোর, একটি স্কয়ার এবং ২০২১ সালে আমদানি করা দুটি ল্যান্ডক্রুজার। চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ি খালাস আটকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে গাড়িগুলোর বিষয়ে মতামত চেয়ে গত ২১ আগস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে চিঠি পাঠায় চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এনবিআর ৮ ডিসেম্বর সেই চিঠির জবাবে উল্লেখ করে, সাবেক এমপিদের গাড়িগুলো স্বাভাবিক শুল্ককর পরিশোধ করেই খালাস নিতে হবে। এজন্য আমদানিকারকদের গাড়ি খালাস নেওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেয় কাস্টমস। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় অবশেষে নিলামে তোলা হচ্ছে গাড়িগুলো।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসেন আজাদীকে বলেন, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা সাবেক এমপিদের ৩১টি গাড়ির মধ্যে আমরা ২৪টি নিলাম তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাকি সাতটি গাড়ির কিছু প্রক্রিয়া বাকি আছে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে পরবর্তীতে সেগুলো নিলামে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে যাদের গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে তারা হলেন পিরোজপুর–২ এর সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, ময়মনসিংহ–৭ এর এবিএম আনিসুজ্জামান, বগুরা–৫ এর মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, সিরাজগঞ্জ–২ আসনের সাবেক এমপি জিন্নাত আরা হেনরি, সুনামগঞ্জ–১ এর রনজিত চন্দ্র সরকার, নেত্রকোনা–৪ এর সাবেক এমপি সাজ্জাদুল হাসান, গাইবান্ধা–২ এর শাহ সারোয়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া–১ এর এসএকে একরামুজ্জামান, চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড) এর সাবেক এমপি এসএম আল মামুন, খুলনা–৩ এর এসএম কামাল হোসাইন, চট্টগ্রাম–১৬ (বাঁশখালী) এর মুজিবুর রহমান, নওগাঁ–৩ এর সুরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, সংরক্ষিত নারী আসন–১৩ এর সাবেক এমপি অভিনেত্রী তারানা হালিম, ঝিনাইদহ–২ এর নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, জামালপুর–৫ এর আবুল কালাম আজাদ, সুনামগঞ্জ–৪ এর মুহাম্মদ সিদ্দিক, চট্টগ্রাম–১৫ এর আবদুল মোতালেব, সংরক্ষিত নারী আসন ১৪ এর শাম্মী আহমেদ, ময়মনসিংহ–১১ এর আবদুল ওয়াহেদ, সংরক্ষিত নারী আসন ১২ এর রুনা রেজা, যশোর–২ এর তৌহিদুজ্জামান, টাঙ্গাইল–৮ আসনের অনুপম শাহজাহান জয়, নিলফামার–৩ এর সাদ্দাম হোসাইন পাভেল ও সংরক্ষিত নারী আসন–৩৫ ফরিদা ইয়াসমিন।