পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। সেজন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার কথা জানিয়েছেন দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা হলেন– উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক নিয়ামুল হাসান গাজী এবং জয়নাল আবেদীন। গতকাল সোমবার বিকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, গত ১৮ এপ্রিল দুদকের সভায় বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো বিবেচনায় নিয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলবে। খবর বিডিনিউজের।
বেনজীর আহমেদ ছাড়াও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তাদের তলব করা হবে কিনা জানতে চাইলে দুদক সচিব বলেন, অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানোর সময় যা যা প্রয়োজন সকল কিছু বিধি মোতবেক করা হবে। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী অবসরে যান বেনজীর। আইজিপি হওয়ার আগে তিনি র্যাবের প্রধান এবং ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্বও পালন করেন। গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ ও ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন দৈনিক কালের কণ্ঠ। সেখানে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপালগঞ্জে প্রায় ১৪০০ বিঘা জমিতে একটি ইকো রিসোর্ট গড়ে তুলেছেন বেনজীর পরিবার। এছাড়া ঢাকা ও পূর্বাচলে সাবেক এ আইজিপির একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি আছে।
বনের জমি দখল করে গাজীপুরে রিসোর্ট বানানোর অভিযোগও আনা হয়েছে দৈনিকটির প্রতিবেদনে। ওই রিসোর্টের এক–চতুর্থাংশের মালিকানা বেনজীর পরিবারের বলে পত্রিকাটি দাবি করেছে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে হবিগঞ্জ–৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রোববার বেনজীর এবং তার পরিবারের সদস্যদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে দুদকে আবেদন করেন। এদিকে বেনজীর আহমেদের সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে সোমবার হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন সালাহ উদ্দিন রিগ্যান নামের একজন আইনজীবী।
বিষয়গুলো নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বললেও গত ২০ এপ্রিল ফেইসবুক লাইভে এসে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন বেনজীর আহমেদ। তিনি দাবি করেন, যেসব অভিযোগ তার এবং পরিবারের বিরুদ্ধে উত্থাপন করা হয়েছে, তার বেশিরভাগই ‘মিথ্যা’। যেসব সম্পত্তি অর্জনের তথ্যকে ‘মিথ্যা’ বলছেন, কেউ যদি সেই তথ্যকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তবে সেই সম্পত্তি সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে হাসিমুখে লিখে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন সাবেক পুলিশ প্রধান।