কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আজ শুক্রবারের জয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফের ফাইনালে পৌঁছাল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে তারা শিরোপার মঞ্চে গিয়ে ভারতের কাছে ট্রফি হাতছাড়ার বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়ে। ভুটানকে বড় হার দিয়ে আবারও ট্রফির এক কদম দূরে লাল-সবুজের দল।
এদিন পুরো সময় দাপট দেখিয়েছেন সাবিনা-মারিয়ারা। বইয়ে দিয়েছেন আরেকটি গোলবন্যা। আসরে ৪ ম্যাচে ৮ গোল পেলেন অধিনায়ক সাবিনা। ২০১০ সালে ভুটানকে ৭-০ তে হারানোর ম্যাচেও জোড়া গোল করেছিলেন তারকা স্ট্রাইকার।
বাকিদের মধ্যে একটি করে গোল করেছেন সিরাত জাহান স্বপ্না, কৃষ্ণারাণী সরকার, ঋতুপর্ণা চাকমা, মাসুরা পারভিন ও তহুরা খাতুন।
সেমিফাইনালে শক্তি-সামর্থ্যের বিচারে যোজন এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে রক্ষণ সামলে খেলার কথা জানিয়েছিলেন ভুটান অধিনায়ক পেনা ছোডেন।
ম্যাচে ফল এলো পুরো উল্টো। সাবিনা-মারিয়া-কৃষ্ণাদের দাপটে দাঁড়াতেই পারেনি তাদের রক্ষণ। তাতে গোল এসেছে মুড়ি-মুরকির মতো।
লাল-সবুজের দল এগিয়ে যায় ম্যাচের দুই মিনিটের মাথায়। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে উল্লাসে মাতেন নাম্বার ১০ সিরাত জাহান স্বপ্না। প্রতিপক্ষের বাজে ট্যাকলে খেলার ১১ মিনিটে চোটে চোখে পানি নিয়ে মাঠ ছাড়েন দলের অন্যতম এ স্ট্রাইকার।
খানিকপর স্কোরলাইন দ্বিগুণ করেন সাবিনা। ১৭ মিনিটে মারিয়া মান্ডার পাসে বল নিয়ে ফাঁকায় চলে আসেন অধিনায়ক। দারুণ শটে গোল করেন। পরে আরও দুবার বল জালে জড়িয়েছেন সাবিনা। ম্যাচের ৫৪ ও ৯০ মিনিটে গোল করে মাতেন আসরে নিজের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকে।
খেলার ২৯ মিনিটে ৩-০ করেন কৃষ্ণারাণী সরকার। ঋতুপর্ণা চাকমার দুর্দান্ত ক্রস থেকে দর্শনীয় হেডে লক্ষ্যভেদ করেন। পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান আরেকধাপ বাড়িয়ে নেন ঋতুপর্ণা নিজেই। বল নিয়ে এগিয়ে যাওয়া কৃষ্ণাকে ঠেকিয়ে দেন ভুটান গোলরক্ষক সঙ্গীতা মনোঘার। ফিরতি শটে বল জালে জড়ান স্বপ্নার বদলি নামা ঋতুপর্ণা।
৩৭ মিনিটে ব্যবধান বাড়তে দেননি ভুটান গোলরক্ষক। বিরতির আগে আরও কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে পূর্ণ উদ্যমে ছুটতে থাকেন ছোটনের শিষ্যরা। আক্রমণে ফলও আসে দ্রুত, এ অর্ধের আট মিনিটের মাথায় গোল করেন সাবিনা। কৃষ্ণার কাটব্যাক থেকে বক্সের ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে যান অধিনায়ক, প্লেসমেন্ট শটে ৫-০তে করে নেন স্কোরলাইন।
দুই মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন রক্ষণ তারকা মাসুরা পারভিন। সেট পিস থেকে নেয়া সাবিনার শট সরাসরি ঠেকিয়ে দেন ভুটান গোলরক্ষক। তবে বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি, সেটাই কাজে লাগান মাসুরা।
ম্যাচের ৫৬ মিনিটে কৃষ্ণার শট বারপোস্টে লেগে ফেরত আসে। ৬৮ মিনিটে হ্যাটট্রিক তুলে নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন সাবিনা। ৮০ মিনিটে আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় অফসাইডের ফাঁদে।
ম্যাচের ৭ নম্বর গোলটি আসে ৮৭ মিনিটে। তহুরা খাতুন গোল করার পর ৯০ মিনিটে ভুটানের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন সাবিনা, পূর্ণ হয় হ্যাটট্রিক। পাকিস্তানের পর ভুটানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক তুললেন অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার।