সাফ জয়ী মেয়েদের ব্যাগের তালা ভেঙে চুরির অভিযোগ, জিডি

অক্ষত লাগেজই বুঝে নিয়েছে বাফুফে, বলছে বিমান কর্তৃপক্ষ

| শুক্রবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ

মেয়েদের সাফ ফুটবলের শিরোপা জয় করে দেশে ফেরা বাংলাদেশ জাতীয় দলের কয়েকজন খেলোয়াড়ের লাগেজের তালা ভেঙে টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন বলেছেন, জাতীয় দলের খেলোয়াড় সামসুন্নাহার, কৃষ্ণা রানি সরকারের ব্যাগ কেটে ডলার চুরি হওয়ার অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। সামসুন্নাহার কয়েকটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তার ব্যাগ থেকে আড়াই লাখ টাকা সমমানের ডলার ও টাকা চুরি গেছে। আরো কয়েকজন ফুটবলারের লাগেজের তালা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। মেয়েদের ব্যাগ থেকে পোশাক, প্রসাধনীসহ উপহার সামগ্রীও খোয়া যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর ও মতিঝিল থানাতে জিডি করেছে বাফুফে।
এদিকে বিমানবন্দরে ফুটবলারদের লাগেজের তালা ভেঙে চুরির অভিযোগের সত্যতা মেলেনি বলে জানিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলার পর বিকালে আলাদা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানানো হয়। খবর বিডিনিউজের।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষতির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রটোকল প্রতিনিধি ও দুজন টিম অফিসিয়াল লাগেজ ট্যাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সম্পূর্ণ অক্ষত এবং তালাবদ্ধ অবস্থায় বুঝে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন।
আর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়গণ লাগেজগুলো সঠিক অবস্থায় বুঝে নেন। লাগেজগুলো বুঝে নেওয়ার সময় লাগেজ হতে কোনো কিছু খোয়া যাওয়ার বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বাফুফের প্রতিনিধিগণ লাগেজগুলো দুটি কাভার্ড ভ্যানে উত্তোলনপূর্বক এয়ারপোর্ট এরিয়া ত্যাগ করেন। এয়ারপোর্টে বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে এয়ারপোর্টে বর্ণিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৭২ ফ্লাইটে বুধবার নেপাল থেকে দেশে ফেরে বিজয়ী দলের মেয়েরা। ছাদ খোলা বাসে চড়িয়ে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বাফুফে দপ্তরে। হাতে পতাকা ও ব্যানার নিয়ে স্লোগানে স্লোগানে শিরোপাজয়ী মেয়েদের স্বাগত জানায় হাজারো মানুষ। পরদিন সকালে চুরির খবর নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করলে বিমান বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটিলিয়ন (এপিবিএন) জানায়, চুরির খবর তারা পেয়েছে এবং তদন্তও শুরু হয়েছে। বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা কিরণ দুপুরে বলেন, এটা খুবই হতাশার। এরকম একটা ঘটনা অবশ্যই প্রত্যাশিত না। এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। জানার পরই আমরা সিভিল এভিয়েশনকে জানিয়েছি। তদন্ত চলছে, দেখা যাক। তিনি জানান, কৃষ্ণা রানি সরকারের ৯০০ ডলার, শামসুন্নাহার সিনিয়রের ৪০০ ডলার খোয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় লাগেজগুলো বাফুফেতে পৌঁছানোর পর চুরির বিষয়টি মেয়েরা দেখতে পায়। আমরা যখনই জানতে পারলাম টাকাগুলো তারা পাচ্ছে না, তাদের ব্যাগের তালা খোলা ছিল, সঙ্গে সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকেও জানানো হয়েছে, সিভিল এভিয়েশনকেও জানানো হয়েছে। বিমানবন্দর ও মতিঝিল থানাতেও জিডি করা হয়েছে।
চুরির ঘটনা কোথায় ঘটেছে, সে বিষয়ে যে অস্পষ্টতা রয়েছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কিরণ বলেন, বাফুফের সিসিটিভি ফুটেজও চেক করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, এয়ারপোর্ট থেকে লাগেজগুলো আনার পর পুলিশ পাহারায় ছিল। লাগেজের যে কাভার্ড ভ্যান, তার পেছনে আমাদের বাফুফের দুটি গাড়ি ছিল। ওখানে যত রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা যায়, সেটা করেই কিন্তু আমরা বাফুফে ভবনে এনেছি। বাফুফে ভবনে যেখানে রাখা ছিল, সেখানে সিসিটিভি আছে। সেখানে এরকম কিছু পাইনি। যে টাকা গেছে, খেলোয়াড়দের বয়স বিবেচনায় এটা অনেক টাকা মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা না পাওয়া গেলে অবশ্যই তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিনব কায়দায় সিএনজি টেক্সি চুরি ও বিক্রি
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে অস্ত্রসহ জেএসএস সদস্য আটক