সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে চায়ের আড্ডা-সবখানে ঝড় তুলেছে ‘হাওয়া’ সিনেমার ‘সাদা সাদা কালো কালো’ গানটি, তুমুল আলোচনার মধ্যে অনেকে গানের স্রষ্টা হাশিম মাহমুদকে খুঁজছেন। শ্রোতাদের কাছে হাশিম মাহমুদ অপরিচিত নাম হলেও নব্বইয়ের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা, টিএসসি, ছবির হাটের পরিচিত মুখ তিনি। শাহবাগের আড্ডায় গানটি নিয়মিত গাইলেও ‘হাওয়া’ সিনেমার সুবাদে শাহবাগ ছাপিয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে তার নাম। তিনি একাধারে কণ্ঠশিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও ছড়াকার। পঞ্চাশোর্ধ্ব শিল্পী অনেকটা নিভৃতে বাস করেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার তল্লা সবুজবাগ এলাকায়। খবর বিডিনিউজের।
নারায়ণগঞ্জ শহরে বেড়ে উঠলেও যৌবনের বড় একটি সময় কাটিয়েছেন ঢাকাতে। নব্বইয়ের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় তার ভরাট কণ্ঠ শুনে মুগ্ধ হননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু গানে নয় কথাতেও মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন তিনি। শাপলা নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন হাশিম মাহমুদ। যাতায়াত ছিল স্থানীয় সংগীত বিদ্যালয় জয়জয়ন্তী জলসায়। পরে ঢাকার চারুকলা, মোল্লার দোকান, ছবির হাট, পাবলিক লাইব্রেরি ও শাহবাগ হয়ে ওঠে তার বিচরণক্ষেত্র। এক সময় বৈরাগী নামে একটি গানের দলও করেছিলেন তিনি। আবুল হাশেম ও জমিলা আক্তার দম্পতির সাত সন্তানের তৃতীয় হাশিম মাহমুদ। শারীরিক ও মানসিক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। তার বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, অসুস্থতার কারণে গানের কথা ও সুর ভুলে যান হাশিম মাহমুদ। গাইতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেন তালও। ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে করেননি। মায়ের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের বাড়িতে থাকেন তিনি।
বাসায় রোজ খাতা-কলম নিয়ে বসে পড়েন লিখতে। নিজের ঘরে পাতা মলিন চাঁদরে মোড়ানো খাটের উপর স্তুপাকারে লেখার খাতা। তাতে নিজের মৌলিক লেখার পাশাপাশি রবীন্দ্র, নজরুল ও লালন গীতি লিখে রেখেছেন। সারাক্ষণ এই ঘরেই পড়ে থাকেন। বাইরে বের হন না। তার শিল্পকর্মের নানান জায়গায় ব্যবহার নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে পরিবারের লোকজনের। হাশিম মাহমুদের লেখা অনেক গান বিনা অনুমতিতে অনেকে ব্যবহার করেছে বলে দাবি তাদের। ন্যুনতম সম্মানীও তাকে দেওয়া হয়নি। অনেকেই আবার নামমাত্র সম্মানি দিয়ে লেখা ব্যবহার করেছেন। তবে যশ বা টাকা-পয়সা নিয়ে কখনও মাথা ঘামাননি হাশিম মাহমুদ।