সাতকানিয়ায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে এক কাঠমিস্ত্রি নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম মো. আবদুল গনি রকি (২৫)।
গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বারোদোনা এলাকায় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হওয়ার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার (২৫ জুন) সকালে মারা যান।
নিহত আবদুল গনি রকি কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গোদার পাড়ার মৃত আহমদ কবিরের ছেলে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ দুপুরে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল মান্নান জানান, আবদুল গনি রকি বারোদোনা দোভাষী পাড়া এলাকায় গুনু মিয়ার ছেলে মনজুর আলমের ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতো।
ঘটনার দিন রাত দেড়টার দিকে বারোদোনার বসুমিত দিঘীর পশ্চিম পার্শ্বে নির্মিতব্য রেল লাইনের উপর তাকে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করে।
এসময় বসুমতি দিঘীর পাড় এলাকায় থাকা কয়েকজন লোক তার চিৎকার শুনে সেখানে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে তিনি মারা যান।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. উচ্ছ্বাস কারণ অভি বলেন, “রকিকে হাসপাতালে আনার আগে অনেক বেশি রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার শরীরের পেছনে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ছুরিকাঘাতটি অনেক গভীরে প্রবেশ করায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়া ছাড়াও শরীরের কিছু অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমাদের কাছে যখন নিয়ে এসেছে তখন খুব বেশি সংকটাপন্ন অবস্থায় ছিল। আমরা রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, কাঠমিস্ত্রি রকি ও এলাকার আরো কয়েকজন যুবক মিলে নিয়মিত বসুমতি দিঘীর পশ্চিম পার্শ্বে রেল লাইন এলাকায় মোবাইলে গেম খেলত। ঘটনার দিন গেম খেলার সময় বিরোধ থেকেও এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটতে পারে।
নিহত কাঠমিস্ত্রি আবদুল গনি রকির দোকান মালিক মনজুর আলম বলেন, “রকি আমার দোকানে রমজানের আগে কিছুদিন কাজ করেছিল। ওই সময় যাবতীয় পাওনা বুঝে নিয়ে চলে যায়। গত ৯ জুন আবার আসে। দৈনিক ৫শ’ ৫০ টাকা দরে কাজ করে। ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১ হাজার ১শ’ টাকা নেয়। পরে রাত দুইটার দিকে জানতে পারি রেললাইন এলাকায় তাকে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করেছে।”
নিহতের বড় ভাই মো. আবদুল নবী বলেন, “বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রকি আমাকে ফোন করেছিল। ওই সময় আমার সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। আমার মাকেও ফোন করেছিল। সেদিন বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু বাড়িতে যায়নি। সকালে জানতে পারলাম ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে আমার ভাই মারা গেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।”
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ছুরিকাঘাতে কাঠমিস্ত্রি নিহত হওয়ার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে গেম খেলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।