সাতকানিয়ায় সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তেমুহনী এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। গত রবিবার থেকে পুরোদমে চলছে কাজ। রেললাইনে নতুনভাবে ব্রিজ–কালভার্ট নির্মাণ না করে সংস্কার কাজ শুরু করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলছেন, তেমুহনী এলাকায় আরো ৩টি কালভার্ট নিমাণ করা হবে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমের আগে তা সম্ভব নয়। গতকাল সোমবার দুপুরে দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইনের সাতকানিয়ার তেমুহনী এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনের কাজ। দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত অংশের ঠিকারদারী প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের সহকারী প্রকল্প ব্যবস্থাপক (ডিপিএম) মো. রাশেদুজ্জামান জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অংশের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এটা তেমন উল্লেখযোগ্য কোন ক্ষতি নয়। পানির স্রোতে মাত্র ২৫০ মিটার এলাকায় পাথর, কংকর ও কিছুটা মাটি সরে গেছে। ফলে কয়েকটি স্থানে লাইন কিছুটা দেবে গেছে। আর কয়েকটি স্থানে পাথর, কংকর সরে যাওয়ায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন আমরা দেবে যাওয়া লাইন জগ দিয়ে সামান্য উঠিয়ে বালি, কংকর ও পাথর বসিয়ে দিচ্ছি। মূলত এভাবেই সংস্কার করা হবে। এছাড়া টেকনিক্যাল টিমের দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী যেখানে যেভাবে করতে বলবে সেভাবে করা হবে। তবে সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের সংস্কার কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন করা যাবে।
তেমুহনীর বাসিন্দা মো. আলী হোসেন জানান, রেললাইন নির্মাণ কাজের শুরু থেকে আমরা বলেছিলাম তেমুহনী এলাকায় আরো কয়েকটি ব্রিজ দেয়ার জন্য। ব্রিজ–কালভার্ট বাড়ানোর জন্য আমরা আন্দোলনও করেছি। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ এলাকার মানুষের কথা শুনেনি।
রেলওয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা ও দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। তবে মালামাল পরিবহনে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। রেললাইনের দুই পাশের বিলে পানি থাকায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত অংশে গাড়ি যাওয়ার মতো রাস্তা না থাকায় মালামাল নিতে কষ্ট হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, সংস্কার কাজ যথা সময়ে শেষ হবে। এছাড়া দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও হারবাং এলাকায় বাকী থাকা কাজও আগামী মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এসব কাজও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। পূর্ব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পরীক্ষামূলক ভাবে রেল চলাচল শুরু হবে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে দোহাজারী–কক্সবাজার রেললাইনের উদ্বোধন হবে। তবে এখনো পর্যন্ত তারিখ চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, তেমুহনী এলাকায় আরো ৩টি কালভার্ট হবে। তবে এগুলো এ মুহূর্তে করা সম্ভব নয়। কারণ যেখানে কালভার্ট করা হবে সেখানে এখন গাড়িতে করে মালামাল নেয়া যাবে না। শুষ্ক মৌসুমে রেললাইনের পাশ দিয়ে বিকল্প লাইন করে দিয়ে এসব কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।