সাতকানিয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা ৩ বাসে আগুন

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২১ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় ৩টি বাস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল চলাকালে গতকাল সোমবার ভোরে সাতকানিয়া রাস্তার মাথার দক্ষিণে চট্টগ্রামকঙবাজার মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় এসব বাসে আগুন দেওয়া হয়। খবর পেয়ে সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন দেয়া বাসের মধ্যে ২টি শ্যামলী ও ১টি হানিফ পরিবহনের। সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামকঙবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়া রাস্তার মাথার দক্ষিণে সড়কের পশ্চিম পার্শ্বের মাঠে অন্যান্য দিনের মতো বাস পার্কিং করে রাখে চালকরা। গতকাল ভোরে সেখানে ৩টি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী নৈশপ্রহরী ছালেহ আহমদ জানান, পৌনে চার টার দিকে আমি রাস্তার পাশে হাঁটাহাটি করছিলাম। এসময় চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কের উত্তর দিক থেকে দুইটি মোটরসাইকেল যোগে ৫ জন মুখোশধারী যুবক এসে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ৩টি বাসে আগুন দিয়ে দ্রুত দক্ষিণ দিকে চলে যায়। তখন আমি তাদের দিকে এগিয়ে গেলে তারা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

পুড়িয়ে দেয়া বাসের চালক ওসমান গনি, মো. আমিন ও শাহাদাত হোসেন জানান, হরতালঅবরোধ চলাকালে আমরা গাড়ি চালাই না। হরতালে গাড়ি চালাতে মালিকের নিষেধ আছে। অন্যান্য সময়ের মতো রবিবার রাতেও আমরা গাড়িগুলো পার্কিংয়ে রেখে চলে যায়। আর সকালে জানতে পারি আমাদের গাড়িগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের সাথে কারো কোনা শত্রুতা নাই। আর গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চালালে একটা কথা ছিল। মাঠে দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়িতে কেন আগুন দিল কিছু বুঝতে পারছি না।

শ্যামলী বাসের মালিক কেঁওচিয়া ইউনিয়নের মাদার বাড়ি এলাকার সিরাজুল হক জানান, চট্টগ্রাম নগরীতে মেরামতের কাজ শেষ করে রবিবার রাত ১২ টার সময় বাস ২টি এনে এখানে রেখে বাড়িতে চলে যাই। ভোর বেলা লোকজন ফোন করে জানায় আমার গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এসে দেখি গাড়ির ভেতর বাইরে আগুন জ্বলছে। ততক্ষনে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। কেঁওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ওচমান আলী জানান, নৈশপ্রহরীর তথ্যমতে মোটরসাইকেলে করে এসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজে ঘটনার আগে পরে সে ধরনের কোন মোটরসাইকেল দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে অগ্নিসংযোগকারীরা স্থানীয় এবং আগে থেকে আশপাশে অবস্থান করছিল। আগুন দিয়ে কৌশলে পালিয়ে গেছে।

সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা এসএম হুমায়ুন কার্ণায়েন জানান, ভোরে বাসে আগুন দেয়ার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করি। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হই। তিনি আরো জানান, আগুন জ্বলা অবস্থায় একটি বাস হঠাৎ করে স্টার্ট হয়ে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িড়তে ধাক্কা দেয়। এতে আমাদের গাড়ি কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।

সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউল হক চৌধুরী বলেন, জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস জানান, আগুন দিয়ে বাস পুড়ে দেয়ার খবর পেয়ে পুলিশসহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ করছে পুলিশ। বাসে আগুন দেয়ার পর থেকে এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির টহল আরো জোরদার করা হয়েছে।

সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জামাল হোসেন বলেন, সাতকানিয়া রাস্তার মাথায় গাড়ি পোড়ানোর কাজে বিএনপির কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। নিরীহ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেইদিকে দৃষ্টি রেখে প্রকৃত ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপেট্রোল পাম্পে জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রাখতে নির্দেশ
পরবর্তী নিবন্ধএসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হলো না আলভির