সাতকানিয়ায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, শাশুড়ি গ্রেপ্তার

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ১০ নভেম্বর, ২০২৪ at ৪:১৯ পূর্বাহ্ণ

সাতকানিয়ায় অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। তার নাম রেশমা সুলতানা রিফা (২৪)। গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন রিফা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আর রিফার বাবার অভিযোগ আমার মেয়েকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্যাতন করে হত্যার পর সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে আনা শ্বশুরশাশুড়ি ও ননদের কাছে আত্মহত্যার প্ররোচণার তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে শাশুড়ি রোকেয়া বেগম (৬০) কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকার শনিবার দুপুরে উপজেলার কেরানীহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গৃহবধূ রেশমা সুলতানা রিফা আমিলাইষ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম ডলু এলাকার প্রবাসী মোঃ মহিউদ্দিনের স্ত্রী।

এলাকাবাসী জানান, এখন থেকে তিন বছর আগে আমিলাইষ ইউনিয়নের পশ্চিম ডলু এলাকার সাহাব উদ্দিনের পুত্র প্রবাসী মোঃ মহিউদ্দিনের সাথে পার্শ্ববর্তী কাঞ্চনা ইউনিয়নের সফর আলী সিকদার বাড়ির মাহামুদুর রহমানের মেয়ে রেশমা সুলতানা রিফার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে গৃহবধূ রিফার সাথে স্বামী, শ্বশুরশাশুড়িসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নানা ঝামেলা লেগেই ছিল। দীর্ঘদিন বাবার বাড়িতে থাকার পর গত এক সপ্তাহ আগে রিফা শ্বশুর বাড়িতে আসে। আর গতকাল সকালে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে রিফা আত্মহত্যা করে। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে কেরানীহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিফাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর খবর পেয়ে সাতকানিয়া থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে রিফার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ কালে শাশুড়ি রোকেয়া বেগমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গৃহবধুর শ্বশুর সাহাব মিয়া জানান, আমার বয়স হয়েছে। কাউকে নির্যাতন করার শক্তি আমার নাই। পুত্রবধূ গলায় ফাঁস লাগিয়েছে শুনে তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ডাক্তার দেখে তাকে মৃত ঘোষণা করেছে।

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান জানান, গৃহবধূ রেশমা সুলতানা রিফার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে কেরানীহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার পর রিফার শ্বশুরশাশুড়ি ও ননদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছিল। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদকালে শাশুড়ির বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচণার তথ্য পাওয়া যায়। ফলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় রেশমা সুলতানা রিফার বাবা মাহামুদুর রহমান বাদি হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে সন্ত্রাসী শাহা আলম আটক
পরবর্তী নিবন্ধচকবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জমায়েত কর্মসূচি আজ