সাড়ে চার ঘণ্টা পর যেভাবে উদ্ধার হয়েছিল শিশু আয়াত

চিপস ও আচারের লোভ দেখিয়ে অপহরণ

পটিয়া প্রতিনিধি | সোমবার , ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

পটিয়ায় চিপস ও আচারের লোভ দেখিয়ে মো. আয়াত নামের ৪ বছর বয়সী এক শিশুকে অপহরণ করে এক প্রতিবেশী যুবক। অপহরণের সাড়ে চার ঘণ্টা পর স্থানীয়রা কৌশলে শিশু আয়াতকে অক্ষত অবস্থায় অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন এবং দুই অপহরণকারীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। গত মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পটিয়ার বড়লিয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকারা গ্রামের বাড়ির সামনে থেকে আয়াতকে অপহরণ করা হয়। গ্রেপ্তার দুই অপহরণকারী হলেন, পটিয়ার বড়লিয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকারা গ্রামের মো. আফছারের ছেলে মো. হৃদয় (৩০) ও কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ছিরার টেক এলাকার নাসির আহমদের ছেলে রাসেল (১৯)। শিশু আয়াত বাড়ৈকারা গ্রামের প্রবাসী মাহাবুল আলমের ছেলে।

শিশু আয়াতের চাচা মো. হাবিবুল্লাহ জানান, ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে আয়াত বাড়ির সামনে রাস্তার উপর খেলছিল। সন্ধ্যার পরও সে বাড়িতে না ফেরায় সবাই তাকে খোজাঁখুজি করতে থাকে। পুকুরে পড়ে গেছে ভেবে বাড়ির আশেপাশের সব পুকুরে জাল ফেলে তাকে খোঁজা হয়। এদিকে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আমাদের পরিবারের নম্বরে ফোন করে জানানো হয় আয়াতকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে জীবিত ফেরত পেতে হলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। পরে আমি ওই নম্বরে ফোন করে কথা বললে অপহরণকারী মো. হৃদয়ের কণ্ঠস্বর চিনতে সক্ষম হই। হৃদয় আমাদের প্রতিবেশী। তবুও বিষয়টি তাকে বুঝতে না দিয়ে আমরা থানায় যোগাযোগ করি। অন্যদিকে আমাদের প্রতিবেশীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে কৌশলে হৃদয়কে ফোন করে আয়াতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাকেও খোঁজার জন্য গ্রামে আসতে বলে। তাদের কথামত হৃদয় এলাকায় আসলে লোকজন তাকে ধরে ফেলে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে স্বীকার করে আয়াতকে অপহরণ করে কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যা এলাকায় তার বন্ধু রাসেলের বাসায় আটকে রেখেছে।

পরবর্তীতে স্থানীয় জনতা কৌশলে হৃদয়কে দিয়ে রাসেলকে ফোন করে অপহৃত শিশু আয়াতকে শান্তিরহাট এলাকায় এনে দিতে বলে। হৃদয়ের কথা মতো রাসেল সাড়ে আটটার দিকে শিশু আয়াতকে নিয়ে শান্তির হাট আসলে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা জনতা আরেক অপহরণকারী রাসেলকেও ধরে ফেলে এবং তার কাছ থেকে আয়াতকে উদ্ধার করে। এরপর উত্তেজিত জনতা অপহরণকারী হৃদয়কে গণপিটুনি দেয়। পরে শিশু আয়াতের পরিবার ৯৯৯এ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুই অপহরণকারীকে আটক করে।

এঘটনায় শিশু আয়াতের চাচা মো. হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি পটিয়া থানায় মো. হৃদয় (৩০) ও রাসেল (১৯)সহ অজ্ঞাতনামা ২৩ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পটিয়া থানার উপপুলিশ পরিদর্শক মো. জুয়েল উদ্দিন বলেন, চিপস ও আচারের লোভ দেখিয়ে শিশু আয়াতকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনায় স্থানীয় জনতা দুইজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। অপহৃত শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরোও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাবেক এমপি নদভীর দুদিনের রিমান্ড
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন কারাগারে