সাগরে ভেসে থাকা রোহিঙ্গাদেরকে সাহায্যের জন্য বিশ্বের দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সংস্থাটি এ আহ্বান জানায়। এই রোহিঙ্গাদের অন্তত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং শত শত জন কয়েক সপ্তাহ ভারত মহাসাগরে ভেসে থাকার পর ইন্দোনেশিয়ায় নেমেছে।
ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে বলেছে, গত ছয় সপ্তাহে প্রায় ৫০০ রোহিঙ্গা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছে। অনেক সাহায্যের আবেদনেও অন্য দেশগুলোর অনেকেই সাড়া দেয়নি। খবর বিডিনিউজের।
সোমবার জাতিসংঘ এই সংস্থাটি বলেছে, প্রায় ১ দশকের মধ্যে এ বছরটিই হতে পারে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রাণঘাতী বছর। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোর দুর্দশা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ছে।
ডিসেম্বরের শুরুতে ১৮০ জন বোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নৌকার সবাই মারা গেছে বলে ধারণা করছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।
মিয়ানমারে দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ এখন বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে বাস করছে। বছরের পর বছর ধরে নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে, যখন সমুদ্র তুলনামূলক শান্ত থাকে, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে থাইল্যান্ড এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় ছুটতে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের জনবহুল শরণার্থী শিবিরগুলোতে এখন প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে, যাদের বেশিরভাগই সীমান্ত টপকেছে ২০১৭ সালে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর দমন অভিযান শুরু হওয়ার পর। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির ছেড়ে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া–ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা রোহিঙ্গার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। তাদের হিসাবে, গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৫০০–র মতো, এ বছর সেটি বেড়ে আড়াই হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
কেন বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা এখন শরণার্থী শিবির ছাড়ছে, তা স্পষ্ট না হলেও, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কোভিড বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার কারণে তাদের জন্য পছন্দের জায়গায় যাওয়ার সুযোগ বেড়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।