সাগরের তলদেশে চুরি!

পদ্মা সেতুর মালামালসহ আটক ১৩

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

একটি জাহাজের সাথে ধাক্কায় লেগে বঙ্গোপসাগরের হাতিয়া চ্যানেলে ডুবে যায় পদ্মা সেতুর মালামালবাহী এমভি হ্যাং গ্যাং-১ নামের বার্জ জাহাজটি। গত ২৩ জুলাই বার্জটি ডুবে গেলেও অতি সম্প্রতি পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সাগরে ডুবে যাওয়া বার্জ থেকে প্রায় অর্ধেক মালামাল উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত মালামাল প্রকল্প এলাকায় খালাসের মধ্যবর্তী সময়ে একটি জলদস্যু সিন্ডিকেট ডুবন্ত বার্জ থেকে এসব মালামাল চুরি করে দুইটি বোট বোঝাই করে নিয়ে আসে কর্ণফুলী থানাধীন বদলপুরা এলাকায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রোববার দিবাগত রাতে বোট দুটিসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সদরঘাট নৌ পুলিশ। দুটি বোট থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার কেজি গ্যালভানাইজ এঙ্গেলবার উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নৌ পুলিশ গতকাল সোমবার গ্রেপ্তার ১৩ জন ও পলাতক দুইজনসহ ১৫ জনকে আসামি করে কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের করে সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তাররা হল কর্ণফুলীর বদলপুরা গ্রামের শেখ মোহাম্মদ (২৮), নুরুল আফসার (৩০), মোহাম্মদ আলী (৫৭), মাহবুব আলী (৩০), মো. আলমগীর (৩২), আইয়ুব আলী (৫৫), জবেল হোসেন (৫৯), মো. খায়ের আহমেদ (৪১), আবদুল হামিদ (২৭), আরাফাত (২৫), বাগেরহাট জেলার মংলা থানাধীন মাছমারা গ্রামের মো. আক্কাস (৪০), কুমারখালী গ্রামের রফিক (৪৬), মংলা থানা এলাকার সোহরাব হোসেন (৬০)। অন্যদিকে মামলায় পলাতক আসামিরা হল বদলপুরার জাবেদ আহমদ (৪৫) এবং মো. আরিফ (৩২)।
সদরঘাট নৌ থানার ওসি এবিএম মিজানুর রহমান জানান, আটক ১৩ জনের মধ্যে দুই ডুবুরি আসে খুলনার মংলা এলাকা থেকে। সাগরের গভীরে জাহাজে চুরির অভিজ্ঞতা আছে এই দুই ডুবুরির। তারা সাগরের ৪০-৫০ ফুট গভীরেও যেতে পারে। আটকদের মধ্যে কর্ণফুলীর বদলপুরা এলাকার ৫-৬ জন রয়েছে। তবে পুরো চোরাই সিন্ডিকেটকে সংগঠিত করে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বদলপুরা এলাকার আরিফ ওরফে আলী এবং জাবেদ। বদলপুরা এলাকায় আলী-জাবেদের স্ক্র্যাপ মালামালের গোডাউন রয়েছে।
ওসি জানান, গত ২৩ জুলাই হাতিয়া চ্যানেলে পদ্মা সেতুর মালামালবাহী বার্জটি ডুবে যায। এরপর দুর্ঘটনা কবলিত বার্জ থেকে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ মালামাল উদ্ধার শুরু করে। তারা ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ মালামাল উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয়। এসব মালামাল পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় আনলোড করে আসার মধ্যবর্তী সময়ে চোরাই সিন্ডিকেট ওই বার্জ থেকে মূল্যবান গ্যালবানাইজ এঙ্গেলবার চুরি করে নিয়ে আসে। পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের ভাষ্য অনুযায়ী, আমদানিকৃত এসব এঙ্গেলবার প্রতি কেজি ৩০০ টাকার বেশি। অথচ চোরাই সিন্ডিকেটের সদস্যদের কাছ থেকে আলী-জাবেদ প্রতি কেজি ৪০-৪৫ টাকা করে কেনেন বলে জানান ওসি।
ওসি বলেন, চোর সিন্ডিকেটের ১৩ জনকে আটক করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাাদে তারা স্বীকার করেছে, বদলপুরার আলী ও জাবেদ তাদের এনেছে। সাগরে নামার জন্য সিন্ডিকেটের ডুবুরি সদস্যদের অঙিজেন সাপোর্ট দিতে দুই বোটে কম্প্রেসারও দেয় আলী-জাবেদ। আলী ও জাবেদ পলাতক রয়েছে। আমরা মামলায় তাদের দুইজনকে প্রধান আসামি করেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় আ. লীগের ৪ চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
পরবর্তী নিবন্ধচুনতি অভয়ারণ্য থেকে ৪টি সেগুন গাছ কর্তন