সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনেই সাক্ষী অনুপস্থিত বদির মামলায়

আড়াই মাস পিছিয়ে গেল বিচারিক কার্যক্রম

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২০ at ৩:৫২ পূর্বাহ্ণ

টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে এক যুগ আগে দায়ের হওয়া দুর্নীতির মামলায় চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হলেও নির্ধারিত দিনে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় সাক্ষী দুদকের এক উপ পরিচালক অনুপস্থিত থাকায় মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম আড়াই মাস পিছিয়ে গেল। গতকাল বৃহস্পতিবার বিভাগীয় বিশেষ জজ ইসমাইল হোসেনের আদালতে নির্ধারিত দিনে বদির মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য্য রাখা ছিল। এ দিন আদালতে মামলার প্রথম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সাক্ষী না আসায় আগামী বছর ৩ জানুয়ারি মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। এটা নিশ্চিত করেছেন দুদকের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভুল।
তিনি বলেন, ‘বদির বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় বৃহস্পতিবার আবুল কালাম আজাদ নামে দুদকের এক উপ পরিচালকের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু তিনি ওইদিন উপস্থিত হতে পারেননি। এতে সাক্ষ্যগ্রহণ করা যায়নি। তবে এ সময় আসামি আব্দুর রহমান বদি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালত আগামী ৩ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য্য করে দিয়েছেন।’
২০০৭ সালে আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। গতকাল ১৫ অক্টোবর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য্য ছিল।
বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সাইফুদ্দিন পারভেজ আজাদীকে বলেন, দুদকের দায়ের করা মামলায় মোট ১৮ জন সাক্ষী রয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে ৩০ ডিসেম্বর নগরীর ডবলমুরিং থানায় ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৪ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন ও ৬৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯১ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে আব্দুর রহমান বদির বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় দুদকের পক্ষ থেকে। এই মামলার একমাত্র আসামি হচ্ছেন আব্দুর রহমান বদি। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। টেকনাফ উপজেলার চৌধুরী পাড়া গ্রামের মৃত এজাহার মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান বদি।
দুদকের তথ্যে, দুদকের মামলা দায়েরের পরের বছর ২০০৮ সালের ২৪ জুন আদালতে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২’র তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. আলী আকবর ওই মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এক যুগ আগে দুর্নীতি মামলাটিতে অভিযোগপত্র দাখিলের পরও এতদিন বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি।
দুদকের আইনজীবীরা জানান, আব্দুর রহমান বদি আদালতের কাছে বারবার সময়ের আবেদন করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখেন। ২০১৭ সালের পরে উচ্চ আদালত সেই স্থগিতাদেশ বাতিল করেন।
দুদকের অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, আব্দুর রহমান বদি, স্ত্রী শাহীন আকতার ও মেয়ে সামিয়া রহমানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ মোট ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার ৮৭১ টাকা। কিন্তু দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে আব্দুর রহমান বদি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৫৫ লাখ ২২ হাজার ৮৭৭ টাকা। এতে করে বদি ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৪ টাকা সম্পদ গোপন করেছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে জানান দুদক কর্মকর্তারা। এছাড়া আব্দুর রহমান বদির ৬৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯১ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পেয়েছেন দুদক। এরমধ্যে বদির নামে ৪৭ লাখ ৯ হাজার ৫৮৯ টাকা, স্ত্রীর নামে ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৯৬২ টাকা ও মেয়ের নামে ৬ লাখ ৫ হাজার ৭৪০ টাকা সম্পদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এসব সম্পদের বৈধ আয়ের কোনো উৎস খুঁজে পাননি দুদক কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধর‌্যাব পরিচয়ে ট্রাক ছিনতাইয়ের চেষ্টা
পরবর্তী নিবন্ধশিশুটি চাইল খাবার, রেস্টুরেন্ট মালিক ফাটাল মাথা