বাংলাদেশ দলের তারকা ক্রিকেটার যেমন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, এমনকি মাশরাফি বিন মুর্তজা যখনই সংকটে পড়েছে ক্যারিয়ারে তখনই তার শরনাপন্ন হয়েছে। এছাড়াও নানা কারনে তাকে বলা হয় দেশের সেরা কোচ। কিন্তু দেশের জাতীয় দলকে কোচিং করানোর সুযোগ কমই পেয়েছেন সেই সালাহউদ্দিন। অনেক দিন ধরে অনেক আলোচনার পর অবশেষে তাকে আবার ফেরানো হয়েছে জাতীয় দলে। ২০১০ সালে জাতীয় দলের সহকারি কোচের দায়িত্ব ছাড়ার পর বছর খানেক বিসিবির কোচ হিসেবে কাজ করেছেন একাডেমিতে। এরপর এত বছর পর আবার তাকে জাতীয় দলে ফেরানো হয়েছে সিনিয়র সহকারী কোচের পদ দিয়ে। সালাউদ্দিন যখন ফিরেছেন, তখন পরবর্তী সাকিব–তামিম পাওয়ার আশাও দেশের ক্রিকেটে জেগে উঠেছে নতুন করে। সালাউদ্দিন জানালেন, তিনিও এই লক্ষ্য নিয়েই ফিরেছেন জাতীয় দলে। আগে জাতীয় দলে ছিলাম। তখন একটা প্রজন্মের সঙ্গে কাজ করেছি। সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ, তাদের সঙ্গে কাজ করেছি, মাশরাফির সঙ্গেও। তারা একটি পর্যায় পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে গেছে দেশের ক্রিকেটকে। অনেক কিছুই দিয়েছে। পরের প্রজন্মকেও যদি সহায়তা করতে পারি আমার এত বছরের কোচিং অভিজ্ঞতা থেকে, কারও যদি কোনো উপকার করতে পারি তাহলে দেশের জন্যও লাভ হবে। ওই ক্রিকেটারের জন্যও হয়তো লাভ হতে পারে। মানসিকভাবে হোক, টেকনিক্যালি হোক, সেই দিকগুলোয় যদি সহায়তা করতে পারি, তাতেই বেশি সন্তুষ্ট হব।
ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচিং করানোর সময় যদিও দেশের ক্রিকেটার মান ও মানসিকতা নিয়ে সালাউদ্দিন হতাশা প্রকাশ করেছেন নানা সময়ই। স্থানীয় ক্রিকেটারদের ক্রিকেটবোধ, ‘কমনসেন্স’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে আলোচনার ঝড় তুলেছেন তিনি। এখন অবশ্য আশার ছবি দেখালেন সালাউদ্দিন। তার মতে এই ক্রিকেটারদের চিন্তা ও মানসিকতা বদলে দিতে পারলে শুধু দেশের ক্রিকেটে নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেও তারা সাড়া জাগাবেন। সাকিব, তামিম, মুশফিক, ওরা একটা প্রজন্ম। একটা পর্যায় পর্যন্ত আমাদের নিয়ে গেছে। এই পর্যায়টা যদি আমরা ভাঙতে না পারি, তাহলে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, দেশের ক্রিকেট খুব একটা এগোয়নি। পরের প্রজন্ম যেন তাদের চেয়ে ভালো ক্রিকেটার হতে পারে, আরও বড় হতে পারে, সেই কাজগুলো যদি আমরা করতে পারি তাহলে সুফল আসবে। আর এটা যে খুব অসম্ভব কাজ তা কিন্তু নয়। কারণ এখন তারা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলে। মানসিকভাবে বলুন, শারীরিকভাবে, আর্থিক দিক থেকে, সব দিক থেকেই তারা অনেক সাবলীল। সাকিব–তামিমদের শুরুতে হয়তো ওরকম ছিল না। এখন আরও ভালো করার সুযোগ বেশি। জাতীয় দলে সুযোগ–সুবিধা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। এখানে উন্নতি করার অনেক জায়গা আছে। যদি ক্রিকেটাররা বিশ্বাস করে এবং তার যদি সেভাবে চিন্তাভাবনা করে। এই চিন্তার জায়গা ও মানসিকতা যদি পরিবর্তন করা যায় তাহলে আমাদের এই ছেলেগুলোও হয়তো পরবর্তীতে বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক বড় সম্পদ হয়ে উঠবে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলতি সিরিজে দলে যোগ দিতে পারেননি সালাউদ্দিন। তার দায়িত্ব শুরু হবে সামনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে। তবে কাজ তিনি শুরু করে দিয়েছেন। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে থাকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে তাকে।