শেয়ার কারসাজির অভিযোগ ওঠার তিন বছর পর জরিমানার মুখে পড়লেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানিয়েছে, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার দরে কারসাজির ঘটনায় সাকিবকে এই জারিমানা গুণতে হবে।
একই ঘটনায় আরেক বিতর্কিত সরকারি কর্মচারী আবুল খায়ের ওরফে হিরুকে ২৫ লাখ টাকা, ইশাল কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৭৫ লাখ টাকা, মোনার্ক মার্ট লিমিটেডকে এক লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবরকে ১০ লাখ টাকা, লাভা ইলেক্ট্রোড ইন্ডাস্ট্রিজকে এক লাখ টাকা এবং জাহেদ কামালকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি। খবর বিডিনিউজের।
২০২২ সালে বিএসইসির এক তদন্ত প্রতিবেদনে শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম ওঠে, যাকে বাজার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ২০১৭ সালে শুভেচ্ছা দূত করেছিল বিএসইসি। বছর দুই আগে ওয়ান ব্যাংক, বিডিকম, সোনালী পেপারস, ফরচুন শুজসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে উদ্যোগ নিয়েছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
প্রাইমারি রেগুলেটর হিসেবে ঢাকা স্টক এঙচেঞ্জও (ডিএসই) তদন্ত দল গঠন করে অভিযোগটি খতিয়ে দেখে। দুটি প্রতিবেদনেই সাকিব এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘মোনার্ক হোল্ডিংস’ এর নাম আসে। সাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং মালিকানায় থাকা কোম্পানির বিও হিসাবের মাধ্যমে শেয়ার দরে কারসাজি করেছেন। ওই ঘটনায় সাকিবের কাছে ব্যাখ্যাও চেয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সে সময় বিএসইসির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা রেজাউল করিম বলেছিলেন, কারসাজিতে জড়িত প্রমাণিত হলে কেউ শাস্তি এড়াতে পারে না।
সাকিব নানা ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার পর নামেন পুঁজিবাজারে, যৌথ অংশীদারত্বে খোলেন ব্রোকারেজ হাউজ মোনার্ক হোল্ডিংস। কারসাজির অভিযোগ ওঠার পর মোনার্ক হোল্ডিংস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলেও তিনি বলেছিলেন, তিনি খেলা ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে মন্তব্য করবেন না।
২০১৭ সালে ‘বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’ পালনের এক অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে সাকিবের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন। ওই অনুষ্ঠানে সাকিবও বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনিই এখন কারসাজির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন। জরিমানার সিদ্ধান্তের পর সাকিব আল হাসানের প্রতিক্রিয়া জানতে পারেনি বিডিনিউজ।