ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সম্পদের অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। চিঠিতে ভেঙে দেওয়া সংসদের সদস্য সাকিব ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘অপরাধ লব্ধ আয়’ এবং সেই আয় স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর মাধ্যমে ‘মানিলন্ডারিং’ এর অভিযোগ এনে এর অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলাসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার মিলহানুর রহমান নাওমী নামের সেই আইনজীবী দুদক চেয়ারম্যানের কাছে ওই আবেদন করেন। তিনি বলেন সাকিব আল হাসান অপকর্মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারি ও স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত মর্মে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। সাকিব শত শত কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছেন– এমন অভিযোগও করেন এই আইনজীবী। তিনি বলেন সাকিব নিজে দুর্নীতির করেই ক্ষান্ত নয়, সে তার পরিবারের সদস্যদের নামে ও বেনামে বহু প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুর্নীতি করেছেন।
সাকিব আল হাসান বর্তমানে বাংলাদেশ দলের হয়ে সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ঢাকার আদাবরে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই দিন পর এক পোশাক কর্মী নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আসামি হয়েছেন সাকিবও। যে হত্যাকান্ডের ঘটনায় এই মামলা, সাকিব তখন ব্যস্ত ছিলেন কানাডায় গ্লোবাল টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে। কোটা আন্দোলন ও সেটির সূত্র ধরে সরকার পতনের আন্দোলনের পুরো সময়টা দেশের বাইরেই ছিলেন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেটে সংসদ সদস্য হওয়া এই ক্রিকেটার। সাকিবের বিষয়ে ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ’ তার কাছে আছে দাবি করে দুদকে চিঠি দেওয়া আইনজীবী নাওমী বলেন, এতদিন সাকিবের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে পারে নাই। শত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান দুদক কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই তার দায়ভার ও জবাব দুদককে দিতে হবে। তারকাদের বড় অংশই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি করেন এই আইনজীবী। তিনি বলেন সেলিব্রেটি মহল যে আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সেটি আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। চিঠিতে শেয়ার কারসাজিতে সাকিবকে জড়িয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। আবেদনে অনলাইন জুয়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও সাকিবের সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়। স্বর্ণ চোরাচালান, কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের অর্থ আত্মসাৎ, ক্রিকেটে দুর্নীতি, নির্বাচনি হলফনামায় ব্যবসা, সম্পদের তথ্য ও আয়ের উৎস গোপন, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও তুলে ধরা হয়।