সাকিবের লড়াইটাই প্রাপ্তি

মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় ৪৮ রানে হার টাইগারদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২২ at ৭:৩৯ পূর্বাহ্ণ

নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে যেতে হলে বাংলাদেশকে একরকম হিমালয় পাড়ি দিতে হতো। শেষ পর্যন্ত সে হিমালয় আর পাড়ি দিতে পারেনি টাইগাররা। কারণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দুইশর বেশি রান এক রকম হিমালয়ের মতই। আর প্রতিপক্ষ যখন নিউজিল্যান্ডের মতো দল তখন সেটা আরো কঠিন হয়ে যায়। সে রান টপকে ম্যাচ জেতা সম্ভব হয়নি বাংলাদেশের। টানা তিন ম্যাচেই হেরে গেল বাংলাদেশ। তবে এই ম্যাচে হারের মাঝেও যেটুকু প্রাপ্তি তা হচ্ছে সাকিবের লড়াই। বাকিরা যথারীতি আগের মতই নিস্প্রভ। তাইতো ৪৮ রানে হারতে হয়েছে টাইগারদের। আগের দুই ম্যাচের মত এই ম্যাচেও হয়েছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। গতকাল মেহেদী মিরাজের জায়গায় নামানো হয় সৌম্য সরকারকে। আর এর ফলে স্কোয়াডে থাকা সবাইকে খেলানো হলো সিরিজে। আগের দুই ম্যাচের মত এই ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। শুরুর ব্যাটসম্যানরা কিছু কিছু রান পেলেও মিডল অর্ডারে ভালো করতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। ফলে হারতে হলো বড় ব্যবধানে। সাকিব আল হাসান যেভাবে খেলেছেন, আর দু একজন সেভাবে খেলতে পারলে হয়তো ভিন্ন কিছুই হতো।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ডকে দারুণ সূচনা এনে দেন ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। দুজন মিলে ২৫ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন। অ্যালেনকে পঞ্চম ওভারে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ফেরার আগে এই কিউই ওপেনার ১৯ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৩২ রান। এরপর ঝড় তোলেন কনওয়ে। ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে ৫৪ বলে ৮২ রানের আরেকটি জুটি গড়েন তিনি। গাপটিল ফিরেন এবাদত হোসেনের বলে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে। ২৭ বলে ৩৪ রান করেন তিনি। ১৭তম ওভারে এসে জোড়া উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। ওভারের প্রথম বলেই ফিরেন কনওয়ে। ৪০ বলে ৫ চার আর ৩ ছক্কায় ৬৪ রান করেন এই কিউই ওপেনার। দুই বল পর মার্ক চ্যাপম্যানকেও ফেরান সাইফউদ্দিন। তবে এরপর গ্লেন ফিলিপস বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন। ১৯ বলেই হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ফিরে আসার আগে ২৪ বলে ২ চার আর ৫ ছক্কায় ৬০ রানের তাণ্ডব চালিয়ে আসেন। আর তাতেই নিউজিল্যান্ডের ইনিংস গিয়ে দাঁড়ায় ২০৮ রানে। সাইফ উদ্দিন ৩৭ আর এবাদত ৪০ রানে নেন দুটি করে উইকেট। ২০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই নড়বড়ে শান্ত। দুইবার বেঁচে গিয়েও ফিরেন ১২ বলে ১১ রান কর। লিটন দারুণ কিছু শট খেললেও পারেননি নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে। ব্রেসওয়েলের শিকার হয়ে ফিরেন। ১৬ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ২৩ রান করে। তবুও পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৫২ রান তোলে বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকার আর সাকিব আল হাসান ২৭ বলে যোগ করেন ৪৩ রান। দীর্ঘদিন পর দলে ফিরে সৌম্যও খেলছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। কিন্তু দশম ওভারের শেষ বলে মিলনের শর্ট বলের ফাঁদে পা দেন সৌম্য। ১৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করেন ২৩ রান। এরপর কেবলই সাকিব শো। লড়াইটা করে গেছেন একাই একপ্রান্ত আগলে রেখে। অপরপ্রান্তে আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান এবং ইয়াসির রাব্বি সবাই কেবলই আসা যাওয়া করেছে। কেউই দুই অংকের ঘরে যেতে পারেনি। তবে ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা সাকিব খেলেছেন অধিনায়কের মতোই। দশ বল বাকি থাকতে সপ্তম উইকেট হিসেবে আউট হন সাকিব দলকে ১৫৩ রানে পৌঁছে দিয়ে। ৪৪ বলে ৮টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রান করে ফিরেন সাকিব। আর তাতে বাংলাদেশ পৌঁছে ১৬০ রানে। যা এই সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। টানা তিন ম্যাচে হারা বাংলাদেশ আজ শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি জয়ের লক্ষে মাঠে নামবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস আজ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কলেজের তিন শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ