সাকিব আল হাসান যেন বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন অতীত। গত ৫ আগস্ট দেশে পট পরিবর্তনের পর দেশে ফিরতে পারেননি সাকিব। এরপর বাদ পড়েন দল থেকেও। এখন সাকিবকে নিয়ে কেউ যেন আলোচনাও করতে চায় না। দুই দিন আগে সাকিব সম্পর্কে সাংবাদিকের প্রশ্নে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। এবার বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও যেন সাকিব প্রসঙ্গে কোন কিছু বলার আগ্রহ দেখালেন না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে দেশ ছাড়ার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনেও সাকিবকে নিয়ে প্রশ্নে বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন শান্ত। দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় এক সংবাদকর্মী বাংলায় জানতে চাইলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো একটা টুর্নামেন্টে সাকিবের না থাকাটা কি চিন্তার কারণ? উত্তর দিতে একটুও সময় নিলেন না শান্ত। বললেন ‘জ্বী না।’ ছোট্ট দুটি শব্দে উত্তর দিয়ে ঠোঁট টিপে তাকিয়ে রইলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রশ্নকর্তা হয়তো আরেকটু বড় জবাব কিংবা আরও কিছু শোনার আশা করছিলেন। কিন্তু শান্তর সেদিকে খুব একটা ভ্রুক্ষেপ দেখা গেল না। স্রেফ দুটি শব্দ আর নির্লিপ্ত শরীরী ভাষায় বাংলাদেশ অধিনায়ক বুঝিয়ে দিলেন, সাকিব আল হাসানকে নিয়ে প্রশ্নে খুব একটা আগ্রহী নন তিনি।
দেশ ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে সাকিবকে নিয়ে প্রশ্নে অবশ্য বড় উত্তর দিয়েই বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন শান্ত। তিনি সেদিন প্রশ্ন কর্তাকে বলেছিলেন আসলে এই প্রশ্নটা কেন করলেন আপনি জানি না আমি। আমরা সবাই জানি, এই প্রশ্নের উত্তর অনেক ক্রিকেটার দিয়েছে। এটা ঠিক যে অবশ্যই আমরা সাকিব ভাইকে মিস করব। থাকলে ভালো হতো। এই প্রশ্নের উত্তর অনেকবার পেয়েছেন আপনারা। আমার মনে হয় না, এত বড় একটি টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগে আবার এই প্রসঙ্গে কথা বলাটা যৌক্তিক হবে। সাকিবের মতো ‘জেনুইন’ অলরাউন্ডারের উপযুক্ত বিকল্প পাওয়া কঠিন। তবে গত কিছুদিনে ব্যাটে–বলে তেমন কিছু হয়ে ওঠারই নির্ভরতা জোগাতে শুরু করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দলে আছেন আরেক স্পিনিং অলরাউন্ডার রিশাদ হোসেন। কার্যকর লেগ স্পিনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ঝলক তিনি দেখিয়েছেন এর মধ্যেই। কিছুদিন আগে বিপিএল ফাইনালেও তার ক্যামিও ইনিংস বড় ভূমিকা রাখে ফরচুন বরিশালের শিরোপা জয়ে। মাহমুদউল্লাহকে আগের মতো অলরাউন্ডার এখন আর বলা না গেলেও প্রয়োজনে তিনি হাত ঘোরাতে পারেন। সৌম্য সরকার তো আছেনই। তানজিম হাসান ও নাসুম আহমেদের ব্যাটের হাতও খারাপ নয়। শান্তর আশা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলের জয়ে বড় ভূমিকা রাখবেন পারবেন অলরাউন্ডাররা। তিনি বলেন অলরাউন্ডাররা সবসময় দলকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে। আমাদের ভালো কিছু অলরাউন্ডার আছে। আশা করি তারা পারফর্ম করবে এবং দলের জন্য নিজেদের মেলে ধরবে। বাংলাদেশের স্কোয়াডে যেমন নেই দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব, ভারতীয় দল তেমনি পাচ্ছে না সময়ে সেরা বোলার জাসপ্রিত বুমরাহকে। এমন ক্ষুরধার একজন বোলারকে খেলতে না হওয়ায়টা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় স্বস্তিরই হওয়ার কথা। তবে শান্তর দাবি, তারা বুমরাহর না থাকা নিয়ে এতটা ভাবিত নন। কোনো একজন ক্রিকেটারকে নিয়ে ভাবছি না আমি। ওদের মানসম্পন্ন ক্রিকেটার আরও অনেক আছে। আমরা ভাবছি কীভাবে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি। কারন ম্যাচ জিততে হলে অবশ্যই নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। সব বিভাগেই সেরাটা দিতে হবে। আর সেটা দিতে আমরা সবাই প্রস্তুত। আশা করছি টুর্নামেন্টে ভাল করবে দল।