গোয়ালিয়রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচ আজ শুরু হচ্ছে। আর এ ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হবে গোয়ালিয়রের শ্রীমান্ত মাধাবরাও সিন্দিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামের। কখনও আইপিএলের ম্যাচও হয়নি এখানে। অভিষেকে এই মাঠের উইকেট কেমন আচরণ করবে, তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টি দলে ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়। তিনি টেস্ট সিরিজে ছিলেন না। প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচের উইকেট সম্পর্কে তার ধারণা, উইকেট হবে মন্থর ও নিচু বাউন্সের। দেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে গোয়ালিয়রের উইকেট নিয়ে প্রশ্নে নিজের অভিমত তুলে ধরেন বাংলাদেশের হয়ে ২৯টি টি–টোয়েন্টি খেলা হৃদয়। বড় রানের ম্যাচ হবে না বলে মনে হচ্ছে তার। তার কারনও বলেন তিনি। ‘টি–টোয়েন্টি রানের খেলা। প্রত্যেক দলই রান চায়। কিন্তু এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ এখনও হয়নি। এটা নতুন ভেন্যু। আমরা জানি না উইকেট কেমন আচরণ করবে। অনুশীলনের উইকেট দেখে বুঝেছি, এখানে উইকেট মন্থর ও নিচু বাউন্সের। এরকম উইকেটে বড় রানের ম্যাচ খুব কমই হয়। আইপিএলের খেলাও এখানে হয়নি।’ টি–টোয়েন্টি থেকে সাকিব আল হাসানের অবসরের পর এই সংস্করণে প্রথমবার খেলতে নামছে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারের বিকল্প হিসেবে দলে ফেরানো হয়েছে আরেক অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে। আগের দিন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছিলেন, সাকিবের জায়গায় মিরাজ দ্রুত নিজেকে মানিয়ে নেবেন বলে আশাবাদী তিনি। তবে সাকিবকে ছাড়াই ভারতকে হারানোর ব্যাপারে আশাবাদি হৃদয়। বলেন,‘সাকিব ভাই নেই। অবশ্যই আমরা সাকিব ভাইকে মিস করব। কিন্তু জাতীয় দল থেকে একদিন না একদিন সবাইকে যেতে হবে। আশা করি, আমরা ওদের হারাতে পারব।’
২০২০ সালে যুব বিশ্বকাপ জয় করেছিল বাংলাদেশ দল। সেই দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। দেশের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সাফল্য পাওয়া সেই দল থেকে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয়েছে ১০–১২ জন ক্রিকেটারের। আসন্ন ভারতের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজের দলেও রয়েছেন একাধিক ক্রিকেটার। জাতীয় দলে প্রবেশের পর তাদের মধ্যে বেশি আলো কাড়াদের একজন হৃদয়। যুব বিশ্বকাপ জয় করার পরেও হৃদয়ের ক্ষুধা এখন জাতীয় দলের জার্সিতে ভালো করা। গতকাল সংবাদ সম্মেলনেও হৃদয় বলেন, ‘যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের ৬ জন আছি দেখেই দল বেটার হবে এমন না। ১৫ জন খেলোয়াড়ই আমাদের কাছে সমান। ৬ জন আছি, অনেকে টেস্ট ও ওয়ানডে খেলেছে। ১০–১২ জন খেলে ফেলেছে। অবশ্যই আত্মবিশ্বাস দেয়। বড় অর্জন ছিল আমাদের জন্য।’ কিন্তু হৃদয় নিজেও জানেন সিনিয়র ক্রিকেটে সাফল্য দরকার, ‘তবে ওদিকে চিন্তা করার সময় নেই। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপে ভালো করলে ঐ অভিজ্ঞতা বা অর্জন কাজে লাগবে। এখানে ভালো কিছু করতে না পারলে ওটা মনে হয় না আমাদের খুব একটা কাজে আসবে।’ হৃদয়কে কেন্দ্র করে জাতীয় দলের ভরসা অনেক বেশি। গেল এক বছরে দলের দলের প্রয়োজনে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাট করেছেন। তবে এসবে আপত্তি নেই তার, ‘আমি অনেক পজিশনে ব্যাট করেছি ঠিকাছে এটা দলের পরিকল্পনা ছিল। দল যেভাবে চেয়েছে আমি সেভাবে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যদি এমন প্ল্যান থাকে এক জায়গায় সেট হবো, দল চায়, হবে ইনশাআল্লাহ। যা হয়েছে তা নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।’
হৃদয় সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিলেন বাস্তবতা, ‘জাতীয় দলে এসে সবাই পছন্দের জায়গা পায় না। জায়গা ডিজার্ভ করলে, তৈরি করলে পাওয়া যায়। আমিও সময় তৈরি করতে পারলে এটা হবে ইনশাআল্লাহ। আমি মনে করি দল আমাকে যখন যেখানে নামাবে সেখানেই ভালো করার চেষ্টা করব। ফিল্ডিং হোক ব্যাটিং হোক যেভাবেই হোক দলে অবদান রাখতে চাই।’
ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ১৪ টি–টোয়েন্টি খেলে ১৩টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। তাদের একমাত্র জয়টি অবশ্য ভারতের মাটিতে, ২০১৯ সালে দিল্লিতে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারের সিরিজে নিয়মিত ক্রিকেটারদের বেশ কয়েকজনকে বিশ্রাম দিয়েছে ভারত। এছাড়া গত টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর এই সংস্করণকে বিদায় বলে দিয়েছেন রোহিত শার্মা, ভিরাট কোহলি ও রাভিন্দ্রা জাদেজা।