সাইফুল্লাহর ‘বিপুল সম্পদের’ অনুসন্ধানে দুদক

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তিনি ‘তিন মাইল দূর থেকে একটি অংশ আসে’

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ১৫ অক্টোবর, ২০২২ at ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ দ্বারা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে দুদকের রাঙামাটি কার্যালয়ে একাধিকবার ডাকা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের রাঙামাটি সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শফি উল্লা বলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহর বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ অর্জন’ এর অভিযোগে প্রাথমিক অনুসন্ধান করছি। অনুসন্ধান এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। অনুসন্ধান শেষ না হওয়ার আগে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না।
এদিকে দুদকের এক চিঠির প্রেক্ষিতে মো. সাইফুল্লাহ, তার স্ত্রী আরজুমান আক্তার ও ছেলে শাহেদ আরমানের নামে জমি রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত প্রতিবেদন দুদকে পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রতিবেদনের একটি কপি এই প্রতিবেদকের হাতেও এসেছে। প্রতিবেদনে সাইফুল্লাহ, তার স্ত্রী ও সন্তানের বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে।
প্রেরিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মো. সাইফুল্লাহর জেলা সদরের বাঙ্গালকাঠি মৌজায় রয়েছে ০.১৭ একর জমি, খাগড়াছড়ি বাজারে ৬শ বর্গ ফুট ও ৪২০ বর্গ ফুটের দুটো প্লট রয়েছে এবং খাগড়াছড়ি জেলা সদরে ১২ হাজার ৮৯০ ফুটের আবাসিক প্লট রয়েছে। তার স্ত্রী আরজুমান আক্তারের নামে খাগড়াছড়ি সদরে ১,৬৫০ বর্গফুট, ১০,২৮৭ বর্গফুট ও ৪,৮২৭ বর্গ ফুটের তিনটি আবাসিক প্লট রয়েছে। রামগড় বাজারে ৬৬০ বর্গ ফুটের বাণিজ্যিক প্লট রয়েছে। এ ছাড়া রামগড়ে ৪.২৩ একর জমি রয়েছে। জেলা সদরের গোলাবাড়ি মৌজায় ২ একর জমি রয়েছে।
সাইফুল্লাহর ছেলে শাহেদ আরমানের নামে বাঙ্গালকাঠি মৌজায় ৩.৩০ একর জমি রয়েছে। এ ছাড়া খাগড়াছড়ি বাজারে ৭৪৬ বর্গফুটের দুটো বাণিজ্যিক প্লট রয়েছে। জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রতিবেদনে কেবলমাত্র রেজিস্ট্রেশনকৃত জমির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। খাস জমির কথা উল্লেখ করা হয়নি।
দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ বলেন, আমার বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগটি পুরনো। সেটি নতুন করে যাচাই চলছে। তবে আমার আয়-ব্যয়ের মধ্যে কোনো অসঙ্গতি নেই। আমার আয়কর ফাইলেও কোনো অসঙ্গতি নেই। তিনি বলেন, আমি চাকরি করি। আমি কারো কাছ থেকে টাকা নিইনি, তা আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব। আমি কোনো নিয়োগ থেকে সরাসরি টাকা খাই না। ‘তিন মাইল দূর থেকে’ (বিভিন্ন হাত ঘুরে) যদি একটি অংশ আসে তাতেই আমি খুশি। সরাসরি আমি কোনো পার্টি থেকে টাকা নিই না। আমি যা অর্জন করেছি বুদ্ধির খেলায় অর্জন করেছি। কোনো অপরাধ করে অর্জন করিনি। তিনি জানান, তার সম্পদের পরিমাণ দুই থেকে চার কোটি টাকার মতো হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোগী প্রতি বরাদ্দ ১৭৫ টাকায় উন্নীত করে মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালী ও পেকুয়া পুকুরে ডুবে চার ভাইবোনের মৃত্যু