অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেকের অনুপ্রেরণায় তিনি সাংবাদিকতায় যুক্ত হন। তার সম্পাদনায় দৈনিক আজাদী পত্রিকা দেশের সংবাদপত্র জগতে অনন্য অবস্থানে পৌঁছে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ চট্টগ্রামে সাংবাদিক অঙ্গনের একজন সুনিপুণ পথিকৃৎ। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদীর চেতনার একটি আলোকবর্তিকা। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবেও তাঁর অন্যতম ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ সম্পাদক ও সাংবাদিক হিসেবে যেমন সত্যদ্রষ্টা ছিলেন একইভাবে রাজনীতিক হিসেবেও তিনি ছিলেন নির্লোভ। ৭০’র জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাউজান থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর অসহযোগ আন্দোলনের সময় তিনি বাঙালি জাতিসত্তার উত্থানে আন্তরিকভাবে সক্রিয় ছিলেন।
ভারতে প্রবাসী থাকাকালে অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করতেন, প্রবাসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ও মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় পরিচালনায়ও অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজের শত আর্থিক কষ্টের মাঝেও অন্যদের কষ্টে পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
বর্ণাঢ্য গুণাবলীর অধিকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের শুন্যস্থান কখনো পূরণ হবার নয়। একজন মানুষ হিসেবে তিনি মানুষের জন্যই নিবেদিত ছিলেন। চট্টগ্রাম তথা দেশের প্রবীণতম সম্পাদক, সর্বজনের আস্থাভাজন, দুর্গত বাংলার শুভ বিবেক খ্যাত অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সংবিধান প্রণেতা, অসামপ্রদায়িক চেতনার প্রতীক অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ। আজীবন সততা ও সাহসীকতা ছিল তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বের সম্বল। তাঁর সততা, ন্যায়–নিষ্ঠা ও অসামপ্রদায়িক রাজনীতি নতুন প্রজন্মকে যুগ যুগ ধরে উদ্দীপ্ত করবে।
সমাজ ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থেকেও লোভ–লালসা তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ পরিচ্ছন্ন রাজনীতির একজন নিবেদিত প্রাণ নেতৃত্ব। নির্লোভ, নিরহঙ্কার, সৎ এই রাজনীতিবিদ চট্টলবাসীর হৃদয়ে চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবে। অনন্য গুণাবলীর কারণে অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।












