সাংবাদিককে গ্রেপ্তারে উড়োজাহাজ নামতে বাধ্য করেছে বেলারুশ

| মঙ্গলবার , ২৫ মে, ২০২১ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

ভিন্নমতাবলম্বী এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করতে লিথুনিয়ার পথে থাকা রায়ানএয়ারের একটি উড়োজাহাজের গতিপথ ঘুরিয়ে মিনস্কে নামতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে বেলারুশ সরকারের বিরুদ্ধে।
বেলারুশের সরকার বিরোধীরা এই অভিযোগ করেছেন। বেলারুশের টেলিগ্রাম চ্যানেল নেঙটা মেডিয়া নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, তাদের সাবেক সম্পাদক রোমান প্রোতেসেভিচকে আটক করা হয়েছে। তবে বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, বোমা আতঙ্কের কারণে উড়োজাহাজটির গতিপথ ঘুরিয়ে সেটিকে মিনস্কে জরুরি অবতরণ করানো হয়। যদিও কোনও বোমা তাতে পাওয়া যায়নি। খবর বিডিনিউজের।
বিবিসি জানায়, রায়ানএয়ারের ফ্লাইট এফআর৪৯৭৮ গ্রিসের এথেন্স থেকে রোববার লিথুনিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে যাচ্ছিল। কিন্তু লিথুনিয়া সীমান্তে পৌছাঁর আগে দিয়ে ফ্লাইটটিকে পূর্বদিকে ঘুরিয়ে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে নিয়ে আসা হয়। ফ্লাইটটিতে ১৭১ জন যাত্রী ছিল। রায়ানএয়ার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বেলারুশের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে উড়োজাহাজে সম্ভাব্য নিরাপত্তা হুমকি থাকার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে কাছের মিনস্ক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা বলা হয়।’
কিন্তু ফ্লাইটরাডার১২৪ ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, লিথুয়ানিয়া পৌঁছানোর আগে উড়োজাহাজটি পূর্বে মিনস্কের দিকে ঘুরে যাচ্ছে। কিন্তু বিমানটি মোড় নেওয়ার ওই জায়গাটি থেকে গন্তব্যস্থল ভিলনিয়াস-ই বেশি কাছে ছিল। রায়ানএয়ার জানায়, মিনস্ক বিমানবন্দরে তল্লাশির পর কিছু পাওয়া যায়নি। পাঁচ ঘণ্টা পর বিমানটিকে উড্ডয়নের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে রায়ানএয়ারের বিবৃতিতে প্রোটাসেভিচের কথা উল্লেখ করা হয়নি। নেঙটা মেডিয়াই প্রথম প্রোটাসেভিচ গ্রেপ্তার হওয়ার খবর জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, উড়োজাহাজ তল্লাশি করা হয়েছে, কোনও বোমা পাওয়া যায়নি। সব যাত্রীকে আরেকবার নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন নেঙটা সাংবাদিক রোমান প্রোটাসেভিচ। তাকে আটক করা হয়েছে।”
নেঙটার প্রধান সম্পাদক উড়োজাহাজের এক যাত্রীর কথা টুইট করে জানান, মিনস্কে অবতরণের পর প্রোটাসেভিচ যাত্রীদেরকে তার পরিচয় দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন ‘তারা এখানে আমার মত্যুদণ্ড দেবে।’
বেলারুশের রাষ্ট্র-মালিকানাধীন গণমাধ্যম বেল্টা জানায়, বোমা সতর্কতার পর বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ব্যক্তিগতভাবে উড়োজাহাজটি অবতরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেটিকে পাহারা দিয়ে আনতে মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমানও পাঠানো হয়েছিল।
নিন্দার ঝড় : ইউরোপীয় দেশগুলো এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বেলারুশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে এবং শাস্তি দাবি করেছে। ইউরোপের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা ইইউ ও নেটোকে এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট বেলারুশ কর্তৃপক্ষের এই কাজকে ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড উল্লেখ করেছেন। লাটভিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেলারুশের এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থি উল্লেখ করে এর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপার্লামেন্টে তালা, বাইরেই শপথ নিলেন সামোয়ার প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধআল-আকসা থেকে মুসলিমদের বের করে দিল ইসরায়েলি পুলিশ